সন্ধান নেই সালাহ উদ্দিনের : শঙ্কা উদ্বেগ বাড়ছেই
দিন হিসেবে দুইদিন পার হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতেই। কিন্তু এখনও নিখোঁজ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ। পরিবারের দাবি, গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার রাতে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ‘তারা নেয়নি’। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারেন। খোঁজ খবর না করতে পেরে তার উদ্বিগ্ন পরিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন। আইনী সুযোগ পেতে মরিয়া তার স্ত্রীর একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) গ্রহণ করেনি কোনো থানা পুলিশ। ফলে দেশের বর্তমান হালহকিকতে গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করে স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চেয়েছেন সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ।
মঙ্গলবার রাতের পর থেকেই সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ রহস্য নিয়ে জনমনে নানা আশংকা, আতংক বিরাজ করছে। এ নিয়ে রাজনীতি সচেতন মহলে চলছে নানা গুঞ্জন। কেউ বলছেন, সালাহ উদ্দিন কি তাহলে ইলিয়াস আলী কিংবা চৌধুরী আলমের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছেন, নাকি হালের মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো আটকের পর সুবিধাজনক কোনো সময় পুলিশ তাকে প্রকাশ্যে আনবে? এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। “কোন পথে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের পরিণতি?” তার ভাগ্যে কি ঘটছে? এসব প্রশ্ন সবমহলকে তাড়া করে ফিরছে ।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে মঙ্গলবার রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে তাকে তুলে নেয়া হয়। কিন্তু পুলিশ আটকের খবর স্বীকার না করায় এখন আমরা উৎকণ্ঠায় আছি।’ তিনি জানান, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত ১০টার পর সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে স্ত্রী হাসিনা আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বলে জানা গেছে। কিন্তু কোনো কথা হয়নি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন আহমেদ একজন রাজনীতিবিদ। তিনি নিখোঁজ না গ্রেফতার এটা তো সরকারকেই স্পষ্ট করতে হবে। কারণ দেশের প্রত্যেকটি মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এখন পার্লামেন্ট চলছে। পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত। কারণ এর আগে চৌধুরী আলম ও ইলিয়াস আলীকে আমরা পাইনি। এসব তো কোনো ভাল দৃষ্টান্ত নয়।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) ইফতেখারুল আলম বলেন, ‘সালাহ উদ্দিনকে আটকের কোনো খবর আমাদের হাতে নেই। তবে তিনি কোথায় আছেন তাও জানেন না তিনি।’
র্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মেজর মাকসুদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘সালাহ উদ্দিনকে আটকের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর সালাহ উদ্দিন আহমেদ দলের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং দলের পক্ষ থেকে তিনি কর্মসূচি ঘোষণা ও বিবৃতি দিয়ে আসছিলেন।
এর আগে সালাহ উদ্দিন আহমেদের বাসার কেয়ারটেকার ও দুজন গাড়িচালককে গ্রেফতার করে তিন দিন পর আদালতে হাজির করে পুলিশ।