ইসরাইলে নির্বাচন দিন গুনছে ফিলিস্তিন
ইসলাইলে নির্বাচন, আর দিন গুনছে ফিলিস্তিন। আগামী ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন ঘিরে আশা-হতাশার দোলাচলে রয়েছে পশ্চিমতীর ও গাজার অধিবাসীরা। ইসরাইলের নতুন নেতৃত্ব তাদের ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন আনবে কিনা সে ব্যাপারে তারা সন্দিহান। দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধ ও সংঘাতের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে সত্যিকার শান্তিচুক্তির অপেক্ষায় দুই ভূখণ্ডের সাধারণ মানুষ।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মাদানি বলেন, এটা স্বাভাবিক যে, তাদের নির্বাচনের দিকে আমরা দৃষ্টি রাখব। যেদিন থেকে তারা আমাদের ভূখণ্ড দখল করে জেঁকে বসেছে, সেদিন থেকে প্রতিদিন আমাদের হত্যা করছে, নিপীড়ন চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরাইলের নতুন সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মাদানি বলেন, ডানপন্থী বামপন্থী যেই নির্বাচিত হোক না কেন, প্রশ্ন হচ্ছে শান্তিচুক্তি হবে কিনা। ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, যে সরকারই আসুক, তাদের ভাগ্যে খুব একটা পরিবর্তন আসবে না। তবে ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু চতুর্থবারের মতো পুনর্নির্বাচিত হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশংকা তাদের। প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও আরবের পূর্ব জেরুজালেম দখল করে ইসরাইল। গাজার তিনটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের দুটোই নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরাইলি সৈন্যরা। গত আট বছর ধরে গাজা অবরোধ করে রেখেছে তারা।
ইসরাইলের রাজনৈতিক দলগুলোর ফিলিস্তিন ভাবনা
লিকুদ : প্রথম লিকুদ নেতা হিসেবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২০০৯ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কথা স্বীকার করেছিলেন। কন্তু নয় মাসের শান্তি আলোচনা গত বছরের এপ্রিলে ভেঙে যায়। চলতি সপ্তাহে লিকুদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। আর কোনো ইউটার্ন হবে না। নেতানিয়াহু তার কয়েকটি বক্তব্যে বারবার বলেছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করা হবে না।
জায়নিস্ট ইউনিয়ন : লিকুদের প্রধান প্রতিপক্ষ মধ্যবামপন্থী জয়নিস্ট ইউনিয়ন ফিলিস্তিনের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা চুক্তিতে আগ্রহী। তবে ফিলিস্তিনের নিরস্ত্রীকরণ চায় দলটি। জেরুজালেমে সব ধর্মের প্রার্থনার স্বাধীনতা স্বীকার করছেন তারা। কিন্তু শরাণার্থী ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন করতে দেবে না। ইয়েশ আতিদ : ইয়েশ আতিদ দল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নিতে প্রস্তুত। আরর রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতায় আঞ্চলিক চুক্তি চায়। তবে তারাও ফিলিস্তিন শরাণার্থীদের প্রত্যাবর্তন মানবে না।
জুইশ হোম : ডানপন্থী দল জুইশ হোম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোরতর বিরোধী। তারা প্রচলিত শান্তি আলোচনারও বিপক্ষে। দলের নেতা নাফতালি বেনেত পুরো পশ্চিমতীরকে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ১ লাখ ফিলিস্তিনিকে নাগরিকত্বসহ স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
জয়েন্ট লিস্ট : ইহুদি আরবদের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট লিস্ট দল ফিলিস্তিন প্রশ্নে সবচেয়ে উদার। তারা ১৯৬৭ সীমারেখার আলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী। শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অনুমতিও তারা দেবে।
ইসরাইলি বেইতেনু : কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী দল ইসরাইলি বেইতেনু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা অস্বীকার করে না। তবে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ঘোরতর বিরোধী।