সমস্যা বেশি দিন থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ-হরতালের কার্যকারিতা এখন আর নেই। তবে আন্দোলনের নামে তারা যে জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ হত্যা চালাচ্ছে সেটা আর বেশি দিন থাকবে না। অচিরেই এ সমস্যার অবসান হবে। নাশকতা বন্ধে যা করা প্রয়োজন সরকার তাই করবে। কারণ দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করার অধিকার কারো নেই। বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রবিবার সকালে আগারগাঁওয়ে বিসিসি ভবনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশে বিরাজমান সমস্যা উত্তরণে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই যথেষ্ট অগ্রগতি আমরা লাভ করছি। দেশের সব খাত যখন উন্নয়নের দিকে বিপুলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে সময়ে জ্বালাও-পোড়াও, বর্বরতা ও মানুষ হত্যার কারণে আমরা কিছু সমস্যার মোকাবিলা করছি। আমি জানি না, কেন এ নৃশংস কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। অচিরেই চলমান সংকট থেকে উত্তরণের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, চলমান নাশকতা রুখে দিতে দেশবাসীকে আরো সচেতন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য ও দায়িত্ব আওয়ামী লীগের। কারণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। স্বাধীনতার জন্য এ দলের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে।
গত ছয় বছরে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তোলার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে সাধারণ মানুষ অনেক সুবিধা পাচ্ছে। গ্রামে বসে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক খাতের পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তি খাত থেকে বড় ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। এক্সপোর্টে আমরা শুধু গার্মেন্টস নিয়েই চিন্তা করব না। আমাদের কিন্তু আরো সুযোগ আছে। বিশেষ করে আইটি সেক্টরে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সফটওয়্যার তৈরি করে বাইরে পাঠানো বা অনেক কিছু তৈরি করতে পারি। এ জন্য কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, এ প্রকল্পের কাজ অনেক বিলম্বিত হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এটি শেষ করতে হবে।
যশোরে বহুতল সফটওয়্যার পার্ক নির্মাণ কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার প্রত্যেক বিভাগ ও জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণের লক্ষ্যে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু উপগ্রহ’র মতো মেগা প্রকল্পের কাজ আন্তর্জাতিক টেন্ডার অথবা গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জিটুজি) পর্যায়ে বাস্তবায়ন হওয়া উচিত। জিটুজি পর্যায়ে হলে সময়ের সাশ্রয় হবে। এক্ষেত্রে কিছু সদস্য দেশের সক্ষমতা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদারসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ১৯টি মোবাইল অ্যাপ্ল উদ্বোধন করেন এবং আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে ১০ টাকা মূল্যের একটি ডাক টিকেট, ১০ টাকা মূল্যের একটি উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকা মূল্যের একটি ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন।
স্কাইপি’র মাধ্যমে গোপালগঞ্জের ৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন চালু করেন।