গালফ নিউজের সম্পাদকীয়
রাজনৈতিক সঙ্কট গ্রাস করেছে বাংলাদেশকে
খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠালেই বাংলাদেশ সঙ্কটের সমাধান হবে না। এতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরো গতি পেতে পারে। রাজনীতি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অস্তিত্ব মুছে ফেলা যাবে না। তবে কাদের সঙ্গ বেছে নিয়েছেন খালেদা সে বিষয়ে তাকে খুব সতর্ক হতে হবে। গতকাল গালফ নিউজের এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা লেখা হয়েছে। ‘হাসিনা-জিয়া হেট্রেড ইজ প্যারালাইসিং বাংলাদেশ’ বা ‘হাসিনা-খালেদা জিয়ার রেষারেষিতে অচল বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট গ্রাস করেছে বাংলাদেশকে। এতে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পড়েছে সামাজিক জীবন ও অর্থনৈতিক খাত। অনিশ্চয়তা প্রশমিত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি হত্যা প্রচেষ্টা থেকে রা পেয়েছেন। এটা তার জন্য সৌভাগ্য। এতে সন্দেহের আঙুল আরো একবার উঠছে তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপ খালেদা জিয়ার দিকে। তাকে আবার গ্রেফতার করা হতে পারে। তা করা হলে সরকারের বিরুদ্ধে আরেক দফা বিােভ আন্দোলন দেখা দেবে। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে, কট্টরপন্থীদের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা এরই মধ্যে অনুভূত হচ্ছে এবং প্রমাণও মিলছে। দেশের এই অচলাবস্থায় দেশ হারাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব আয়। রাজনৈতিক হেভিওয়েট এই দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে অহংবোধ ও মতার লড়াইয়ের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় বাংলাদেশের বেশির ভাগ শিল্প-কারখানা তির শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশকে ভারসাম্য অবস্থায় নিয়ে আসতে হলে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফেরাতে হবে। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো হলে অবশ্যই এ সমস্যার সঠিক জবাব হবে না। যখন সহিংসতা পরিহার করে গঠনমূলক সংলাপের কথা বলা হচ্ছে তখন খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো হলে তা হতে পারে কর্তৃপক্ষের ভুল সিদ্ধান্ত। ১৯৯১ সাল থেকে পালাক্রমে বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসেছেন খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা। এখন তারা একে অন্যের বিষয়ে যে তীব্র ঘৃণা ও নিজে উচ্চাকাক্সা পোষণ করেন তাতে বাংলাদেশ এক ঘূর্ণাবর্তে ধরা পড়েছে। রাজনৈতিকভাবে তাদের অস্তিত্বকে মুছে দেয়া যাবে না। কিন্তু কট্টরপন্থীদের উত্থান অবশ্যই একটি উদ্বেগের কারণ। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া কার সাথে আছেন সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক হতেই হবে। চূড়ান্ত বিচারে, এর জন্য উচ্চমূল্য দিতে হতে পারে বাংলাদেশকে।