ব্রিটেনে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

UKব্রিটেনে মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে টোরি ও লেবার পার্টির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন ক্ষমতাসীন টোরি পার্টি নানা পরিকল্পনা আর পলিসির ঝুলি নিয়ে জনগণের দুয়ারে হানা দিচ্ছে, ঠিক একইভাবে বিরোধী লেবার পার্টিও নিজেদের নানা পরিকল্পনার কথা জনগণকে জানান দিচ্ছেন। বসে নেই ক্ষমতার আরো এক অংশীদার লিবডেমও। এই তিন দল এখন মরিয়া আসন্ন নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসীনের জন্য। দেখা যাচ্ছে যে, একটিমাত্র আসন প্রধান দু’দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিতে পারে। আবার গঠিত হতে পারে ঝুলন্ত পার্লামেন্টও। সেজন্য বিশ্বখ্যাত নির্বাচনী মাস্টার মাইন্ড এক্সেল রড, জিম ম্যাসিনা, লিনটন ক্রসবির মতো এডভাইজরদের মোটা অঙ্কের বিনিময়ে হায়ার করে নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
নির্বাচনের মাত্র ৫০ দিন আগে চালানো স্কাই নিউজের এক জরিপে জানানো হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। নির্বাচনে ব্রিটেনের হাউস অফ কমন্সের ৬৫০টি আসনের মধ্যে লেবার পার্টি ২৮০টি এবং রক্ষণশীল টোরি পার্টি লাভ করতে যাচ্ছে ২৭৯টি আসন। এছাড়া, লিবারাল ডেমোক্রাট্স ১৪, ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি ২, স্কটিশ ন্যাশন্যাল পার্টি ৫২, প্লেইড কামরু ৩, গ্রিন পার্টি ১ এবং অন্যান্য দল ১৯টি আসন লাভ করতে যাচ্ছে বলে জরিপে বলা হয়েছে। জরিপে ব্রিটেনের দুই প্রভাবশালী দলের সম্ভাব্য নির্বাচনী ফলাফল প্রায় সমান সমান হলে লন্ডন হাউস অফ কমন্সে যে কোন দলেরই ন্যূন্যতম ৩২৬টি আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে আগামী ৭মে’র নির্বাচনে দেশটির স্কটিশ ন্যাশন্যাল পার্টিকে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী তোড়জোড়। প্রধান দুই পার্টি লেবার ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ এবং মধ্যপন্থী লিবডেম তাদের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্টের প্রার্থী মনোনয়ন পেতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে তৃণমূলের পার্টির সক্রিয় কর্মীর, ক্যাম্পেইনার, লিফলেট বিতরণ, ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইন, টেলিফোন ক্যাম্পেইন ইত্যাদি নানান কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ থাকতে হয়। একইভাবে পার্টির ইলেক্টোরাল ভোটারদের ভোট ছাড়াও পার্টির সিলেকশন বোর্ডের কাছে নানান পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। একজন প্রার্থীর বহুমুখী প্রতিভার ও সক্ষমতা যথাযথভাবে যাচাই এবং ব্রিটেনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পলিটিক্স, ফরেন পলিসি, ইত্যাদি নিয়ে জ্ঞানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমেই তিনি মনোনয়নের চূড়ান্ত টিকেট লাভ করেন। এখানে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য টাকা, পেশী শক্তি, কোন ধরনের সুপারিশ অথবা পার্টি প্রধানের কাছের বা আস্থাভাজনের কোন দাম নেই। পযবেক্ষকরা আরও বলছেন, ব্রিটেন হলো বহু বর্ণের মিশ্রণে এক সমাজ, যেখানে প্রতিটি দেশের নানান বর্ণ আর মিশ্রণের মানুষ একত্রিত হয়ে বাস করলেও রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নমত ও পথের সমর্থক। এখনকার অভিবাসীদের এক বৃহৎ অংশই ব্রিটেনের মূলধারার রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, সমাজনীতির সাথে মিলে মিশে ব্রিটিশ রাজনীতি, অর্থনীতি ও সোসাইটিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button