প্রাচীন ভাইকিং লাশে কেন ‘আল্লাহ’ লেখা আঙটি ?
স্ক্যন্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে মুসলমান অভিবাসীদের নিয়ে যেসব সমস্যা হচ্ছে তা একেবারেই নতুন। কিন্তু যে কথাটা বেশিরভাগ লোকেরই অজানা তা হলো আরব এবং মুসলমানদের সঙ্গে ভাইকিংদের যোগযোগ বহু আগে থেকেই ছিল। তারই একটি প্রমাণ পাওয়া গেল বর্তমান সুইডেনের একটি প্রাচীন বাণিজ্য কেন্দ্র বির্কায়।
ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্র জানাচ্ছে, সেখানে ৯ম শতাব্দির প্রাচীন একটি কবর খুঁড়ে এক মহিলার দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। তার হাতে একটি আংটি ছিল, আর সেই আঙটিতে প্রাচীন আরবিতে লেখা ছিল ‘আল্লাহর প্রতি’ বা ‘আল্লাহর উদ্দেশ্যে’। এটি খনন করেছেন সুইডেনের বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক জালমার স্টলপে।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, রূপার তৈরি এই আঙটিতে যে খুফিক আরবি লেখা রয়েছে তার প্রচলন ছিল ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দিতে। পুরো স্ক্যন্ডিনেভিয়া জুড়ে এটি একমাত্র আরবি নিদর্শন। ঐ নারীর পরনে ছিল স্ক্যান্ডিনেভিয়ার স্থানীয় পোশাক।
ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসার মাধ্যমে এনে এই আঙটি তাকে উপহার দেয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোঝা যাচ্ছে যে আঙটিটি বহু লোকে ব্যবহার করেনি।
স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সেবাস্টিয়ান ওয়ার্মল্যান্ডার এবং সহকর্মীরা বলছেন, ভাইকিংদের সঙ্গে আব্বাসীয় খিলাফতের যে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল এই আঙটি তারই প্রমাণ।
তারা বলছেন, আবার এমনও হতে পারে যে এই নারী কিংবা তার কোনো ঘনিষ্টজন সম্ভবত আব্বাসীয় খলিফাদের শাসনাধীন আরব ভূখন্ড সফর করেছিলেন বা ঐ অঞ্চল থেকে এসেছিলেন।
২০০৮ সালে আবুধাবির ন্যাশনাল সংবাদপত্রে লেখা এক নিবন্ধে ইতিহাসবিদ ফারহাত হুসেইন লিখেছেন, ভাইকিংরা রূপার প্রতি যতোটা আকর্ষণবোধ করতো, সোনার প্রতি তাদের আগ্রহ ততোটা ছিল না।
ভাইকিং নারী কিংবা পুরুষের জন্য রূপা ছিল সামাজিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তির প্রতীক। তারা মৃতের সঙ্গেও রূপার অলঙ্কার কবর দিতো।