বিশ্ব টালমাটাল অর্থনীতির প্রভাব পড়ছে যুক্তরাজ্যের বাজারে
বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব এসে পড়েছে যুক্তরাজ্যের ভোগ্যপণ্যের বাজারেও। আমদানিকৃত কাঁচামালের উচ্চমূল্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে দাম না বাড়িয়ে সুকৌশলে পণ্যের আকার কমাচ্ছে ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এতে ভোক্তা অসন্তোষসহ বাজারে পণ্যের বিক্রি কমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
পানীয় হিসেবে চায়ের প্রতি ব্রিটিশদের আগ্রহের কথা কে না জানে? আর তাই ব্রিটেনের অধিংকাশ রেস্টুরেন্টে জনপ্রিয়তার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই পানীয়টি। এক পেনি’রও কম মূল্যে পাওয়া ধূমায়িত চায়ের কাপ হাতে জমে উঠে পারস্পারিক আড্ডা আর আলাপচারিতা। শুধু পানীয়ই নয়, বাহারি স্বাদের মজাদার সব চকলেটও রয়েছে ব্রিটিশদের পছন্দের তালিকায়। কিন্তু এবার তাতে বাঁধ সাধতে যাচ্ছে মাত্রা ছাড়ানো দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি- এমন আশঙ্কার কথাই বলছেন দেশটির অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর এমন পরিস্থিতিতে নামীদামী ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার ধরে রাখার কৌশল হিসেবে দাম না বাড়িয়ে ছোট করছে তাদের পণ্যের আকার।
লন্ডন স্কুল অব মার্কেটিংয়ের পরিচালক জ্যাকুইসি ডি কক বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে চায়ের ব্র্যান্ডগুলো এখন বেশ চাপের মুখে রয়েছে। কেননা গেল ছয় মাসে চায়ের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ফলে প্রতি কেজি চায়ের দাম গিয়ে ঠেকেছে দুই পাউন্ডে। কিন্তু সে অনুপাতে প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়াতে বাড়ছে না। কারণ এত দাম দিয়ে কেউ হয়তো চা কিনে খেতেই চাইবে না।’
আকার কমানোর পাশাপাশি কেউ কেউ তো বক্সে চকোলেট এর সংখ্যাও কমিয়ে দিচ্ছে। আর এ কারণেই ভোক্তাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে ক্যাডবেরি কিংবা ‘মার্স’ এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকেও।
জনৈক ভোক্তা বলেন, ‘আমি এতদিন জানতেই পারিনি যে মার্স তাদের চকলেট বারগুলোকে ছোট করে ফেলেছে। এমনকি তারা এ বিষয় নিয়ে কোনো ঘোষণা বা বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দেয়নি। এভাবে আমাদেরকে পরিমাণে কম খাবার দিয়ে ওরা কৌশলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।’
এদিকে, ব্র্যান্ড ফিন্যান্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এভাবে খরচ কমালে বাজারে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্র্যান্ড ভ্যালু পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
বিজিসি পার্টনারস বিশ্লেষক মাইক ইনগ্রাম বলেন, ‘বিশেষ করে এশিয়া থেকে আমদানিকৃত কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব পণ্য তৈরিতে এখন বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে।’
এদিকে, ২০১৬ সালে বিশ্বে চকলেটের বাজার ৯ হাজার ৮শ’ ৩০ কোটি ডলারে পৌছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মার্কেটস অ্যান্ড মার্কেটস।