চলে গেলেন আফ্রিকান সাহিত্যের জনক চিনুয়া আচেবে

Achebeচলে গেলেন আফ্রিকান সাহিত্যের জনক চিনুয়া আচেবে। রবিবার বস্টনের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিকদের মতো অন্যতম। পরিবারের অনুরোধে আচেবের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান রাখা হয়েছিল অনাড়ম্বর।
১৯৫৮ সালে তার প্রথম উপন্যাস থিঙ্গস ফল অ্যাপার্ট প্রকাশিত হওয়ার পরই রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন আচেবে। ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে ইগবো যোদ্ধা ওকোঙ্কোর লড়াইয়ের গল্প সারাবিশ্বে ৫০টি ভাষায় ১ কোটির ওপর বিক্রি হয়।
উনিশ শতকের শেষের দিকে ইগবো গ্রামে প্রথম সাদা চামড়ার মানুষের আবির্ভাব ও গ্রামবাসীদের জীবনের অনিশ্চয়তার গল্প তুলে ধরেছিল আফ্রিকার ইতিহাস। আফ্রিকান সাহিত্যের পিতামহ বলে আচেবেকে উল্লেখ করেছেন কবি জ্যাকিকে।
নিজের কবিতার বই ক্রিসমাস ইন বায়াফ্রার জন্য কমনওলেথ পোয়েট্রি প্রাইজ জেতেন আচেবে। ১৯৮৭ সালে তার উপন্যাস অ্যানথিলস অফ দ্য সেভানাহর জন্য বুকার প্রাইজের চূড়ান্ত পর্বে মনোনীত হয়েছিলেন তিনি।
২০০৭ সালে তিনি ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ পান। তার উদ্দেশ্যে নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, আচেবে আফ্রিকাকে গোটা বিশ্বের কাছে উন্মোচন করেছেন। তার সান্নিধ্যে জেলের প্রাচীর ভেঙে পড়েছে। অ্যান ইমেজ অফ আফ্রিকা: রেসিজন ইন কনরা’স হার্ট অফ ডার্কনেস (১৯৭৫) রচনায় কঠিন সমালোচনা করেন জোসেফ কোনরার।
১৯৩০ সালে নাইজিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে ওগিদিতে জন্ম আচেবের। ইবাদান ইউনিভার্সিটি থেকে স্কলারশিপ পাওয়ার পর নাইজিরিয়া ব্রডকাস্টিং সার্ভিসে কাজ করেন আচেবে। নিজের উপন্যাস থিঙ্গস ফল অ্যাপার্ট লেখার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষা বেছে নিয়েছিলেন আচেবে। সেই কারণে পড়েছিলেন সমালোচনার মুখেও। কিন্তু, আচেবে বলেছিলেন গোটা বিশ্বের কাছে আফ্রিকাকে তুলে ধরতেই এই ভাষা বেছে নিয়েছেন তিনি।
তার চতুর্থ উপন্যাস ১৯৬৬’র আ ম্যান অফ দ্য পিপলও সমালোচনার মুখে পড়েছিল। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে নাইজিরিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে তার ঐতিহাসিক স্মৃতিকাহিনী দেয়ার ওয়াজ আ কান্ট্রি ছিল তার শেষ লেখা।
বায়াফ্রান অপসরণকে সমর্থন করেছিলেন আচেবে। কিন্তু ১৯৭০ সালে গৃহযুদ্ধের পর তিনি সাময়িক রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯০ সালে নাইজিরিয়ায় এক পথ দুর্ঘটনায় শরীরের নিচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন আচেবে। ২০০৪ ও ২০১১ সালে দু’বার নাইজিরিয়া সরকারের কমান্ডার অফ ফেডারেল রিপাবলিক খেতাব প্রত্যাখ্যান করেন আচেবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button