সড়কপথে লন্ডন টু যুক্তরাষ্ট্র !
মেহেদী হাসান: সড়কপথে লন্ডন টু যুক্তরাষ্ট্র গমন! শুনতে বিস্ময়কর মনে হলেও এটাই হতে যাচ্ছে ভবিষ্যত পৃথিবীর অনিবার্য বাস্তবতা। সুদূর মার্কিন মুলুকে যেতে হলে আর প্লেনে করে আটলান্টিক বা প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিতে হবেনা। তাহলে কি করে সম্ভব? বিপুল জলরাশির এসব মহাসাগর কি শুকিয়ে যাবে? না তাও নয়। তাহলে?
তাহলে যা করতে হবে তা হল ১২ হাজার ৪শ মাইল দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মান করতে হবে। রাস্তাটি যুক্তরাজ্য থেকে শুরু হয়ে রাশিয়ার পশ্চিমে অবস্থতি বেরিং প্রণালী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে যুক্ত হবে।
ফলে গেটা পৃথবীর অর্ধপৃষ্ঠজুড়ে বিরাজ করবে এ মহসাড়ক এবং এটি হবে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম মহাসড়ক বা সুপারহাইওয়ে।
এশিয়া এবং ইরোপের বিদ্যমান সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত থাকবে এ সুপারহাইওয়ে।
এ মহাসড়কের পাশ দিয়ে একটি ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে লিঙ্ক, গ্যাস এবং তেলের পাইপলাইনও থাকবে। রাশিয়ার চুকোতকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার মধ্যে একটি রেল টানেলও নির্মিত হবে এ প্রকল্পের আওতায়।
রাশিয়ার, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের রাস্তার অবস্থা খুব একটা ভাল নয় বর্তমানে। এর মধ্যে জোসেফ স্টালিনের সময় রাজনৈতিক বন্দীদের হাড় দিয়ে তৈরি একটি রাস্তাও (রোড অব বোনস) রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে এ সুপারহাইওয়ে নির্মিত হলে বদলে যাবে গোটা রাশিয়ার চিত্র। কারণ এর মাধ্যমে রাশিয়া হয়ে উঠবে বিশ্ব সড়ক যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল। গোটা ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার সাথে মেলবন্ধনের কেন্দ্রে থাকবে রাশিয়া। এ সড়কের ফলে বিশ্ব পর্যটনেরও অন্যতম গন্তব্যস্থান হয়ে উঠবে রাশিয়া। এ সড়ককে ঘিরে গড়ে উঠবে নতুন নতুন অনেক শহর। অবারিত হবে বিনিয়োগের অপার সুযোগ। বিনিয়োগকারীরা খুঁজে পাবে বিনিয়োগের নতুন অনেক ঠিকানা।
রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্স এর প্রধান ভøাদিমির ফরটভ সম্প্রতি এ মহাপরিকল্পনা পুতিনের সামনে পেশ করেছেন।
ফরটভ দি সাইবেরিয়ান টাইমসকে জানিয়েছেন এ প্রকল্প খুবই ব্যয়বহুল এবং উচ্চাবিলাসী। কিন্তু এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বিশ্বের বিরাট একটি অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ মহাসড়ক হল অস্ট্রেলিয়ার হাইওয়ে -১। এটি গোট অস্ট্রেলিয়াকে বেস্টন করেছে এবং এর দৈর্ঘ ৯ হাজার মাইল। এরপর ৬ হাজার ৪শ মাইল দ্বিতীয় দীর্ঘ সড়ক রয়েছে রাশিয়ায় এবং এর নাম হল ট্রান্স সাইবেরিয়ান হাইওয়ে।
নতুন সুপারহাইওয়ে নির্মিত হলে একজন ড্রাইভার প্রথমবারের মত গাড়ি চালিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র চলে যেতে পারবে।
ফরটভের মতে এ সড়ক নির্মানে ট্রিলিয়নস অব ডলারস প্রয়োজন হবে কিন্তু এখান থেকে যা অর্জিত হবে তা হিসেবে আটবেনা।
রাশিয়ান রেলওয়ের প্রধান ভøাদিমির ইয়াকুনিন এ মহাপরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেন। তিনি পুতিনের বেশ ঘনিষ্ঠ। ইয়াকুনিন এ মহাসড়কের নাম দিয়েছেন ‘এ্যান ইন্টার স্টেট, ইন্টার সিভিলাইজেশন প্রজেক্ট’ বা আন্তরাষ্ট্র আন্তসভ্যতা প্রজেক্ট।