কেমন হবে ব্রিটেনের পরবর্তী সরকার ?
ব্রিটেনের নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। আগামী ৭ মে নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন ডেভিড ক্যামেরন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা বিরোধী দল লেবার পার্টির এড মিলিব্যান্ড গড়তে যাচ্ছেন পরবর্তী সরকার। তবে কয়েক দশকের মধ্যে এটাই এমন নির্বাচন, যাতে নিশ্চিত ভবিষ্যদ্বাণী করা যাচ্ছে না। নির্বাচনে কোন দল কেমন ভোট পেলে কেমন সরকার গঠিত হবে সেদিকে নজর বুলানো যাক।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার (মেজরিটি গভর্নমেন্ট): ব্রিটেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নির্ধারিত ৬৫০ আসনের মধ্যে কোনো দল কমপক্ষে ৩২৬টি আসন পেলে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে পারবে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে সাধারণ ও নির্ভেজাল পদ্ধতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ব্রিটেনের ১৮টি সরকারের মধ্যে ১৬টিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার। বর্তমান ক্যামেরনের কনজারভেটিভ পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করেছে।
জোট সরকার (কোয়ালিশন গভর্নমেন্ট): জোট সরকার তখন গঠিত হবে, যখন কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাবে। এমতাবস্থায় দুটো বড় দল কনজারভেটিভ বা লেবার পার্টি ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করে ৩২৬টি বা তার বেশি আসন নিশ্চিতের চেষ্টা করবে। ২০১০ সালে এভাবেই সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে সরকার পরিচালনায় দুই দলের জন্যই বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়।
সংখ্যালঘু সরকার (মাইনরিটি গভর্নমেন্ট): যদি কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ না হয় এবং দুই দলের জোট গঠনেও ব্যর্থ হয়, তখন সংখ্যালঘু সরকার গঠিত হতে পারে। ছোট ছোট দলগুলোকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিতে সরকারে ভাগ দিতে হয়। এই সরকার দুর্বল ও অস্থিতিশীল হয়। যে কোনো ইস্যুতে সমর্থন আদায়ে বেগ পেতে হয়। যে কোনো মুহূর্তে এ সরকার ভেঙেও পড়তে পারে। ইইউবিরোধী ইউকিপ ও উত্তর আয়ারল্যান্ড ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন কনজারভেটিভ দলের সঙ্গে মিশে সরকার গঠন করতে পারে। অথবা স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী স্কটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্স লেবার পার্টিকে সমর্থন করতে পারে। ওই জোটকে আবার রানীর সম্মতি অর্জন করতে হবে এবং পার্লামেন্টের কার্যক্রম শুরু হলে আস্থা ভোটে টিকতে হবে।
নতুন নির্বাচন (ফ্রেশ ইলেকশন) : ছোট দলগুলোর সমর্থন না পেয়ে সংখ্যালঘু সরকার গঠনে ব্যর্থ হলে কিংবা আস্থা ভোটে না জিতলে অথবা কোনো দলের সমর্থন উঠিয়ে নিলে সরকার টিকবে না।
তখন নতুন নির্বাচনে অংশ নেয়া ছাড়া বিকল্প থাকবে না। তখন একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনের লক্ষ্যে দ্রুত নতুন নির্বাচন হবে। এবার এমনটি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা যদি হয়, তবে ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো এক বছরের মধ্যে দু’বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।