ফরিদপুরে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৫
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কৈডুবী এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ২৩ জন। এদিকে আহত পরিবহনের চালক মো. জাকির হোসেন এবং তার সহকারী (হেলপার) মো. মন্টু খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল ইসলাম জানান, চালক জাকির হোসেন ও হেলপার মন্টু খানের বিরুদ্ধে হাইওয়ে থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা হয়েছে। তবে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানাতে পারেননি তিনি।
তিনি আরও জানান, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোসেন মামলাটি দায়ের করেন।
মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় পাঁচ নারী, এক শিশুসহ ২৫ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২১ যাত্রী। বুধবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর সোনারতরী পরিবহনের আহত চালক মো. জাকির হোসেন এবং তার সহকারী মো. মন্টু খান বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। বাসচালকের দাবি ‘ডাকাত’ পড়েছিল, এ কারণে মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
বুধবার রাত পৌনে ৪টায় ওই দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রারে উল্লেখ আছে।
আহত চালক মো. জাকির হোসেন (৪০) পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রহমতপুর নীলগঞ্জ গ্রামের জয়নাল আবেদিন হাওলাদারের ছেলে। চালকের সহকারী মো. মন্টু খান (৪২) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রায়াপুর গ্রামের মো. কাশেম আলী খানের ছেলে।
চালক জাকির হোসেন দাবি করেন, ‘সোনারতরী পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪৭০৭৪) গাড়িটি নিয়ে বুধবার রাত ৯টায় রাজধানীর গাবতলী থেকে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে ভাঙ্গা উপজেলার কৈডুবি পৌঁছালে যাত্রীবেশী এক ডাকাত তাকে ছুরিকাঘাত করে গাড়ির স্টিয়ারিং কেড়ে নেয়। ঘটনার দুই মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এরপর কি হয়েছে তা জানি না।’
শেবাচিম হাসপাতালের কর্তব্যরত ওয়ার্ড মাস্টার মো. আবুল কালাম জানান, এখানে ভর্তি হওয়া চালক ও তার সহকারীর শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে, তবে গুরুতর নয়। তাদের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৫ এর মধ্যে ১০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সোহাগ (২৮), শাহিন (৩২), আসমা বেগম (৪০), রাসেল (২৮), শাহরিয়ার (৩২), রেজাউল ইসলাম (৩০), সূর্য বেগম (৩৮), হেলাল (৩৫), আমেনা আক্তার (১৪)।
তাদের সকলের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বাসের সুপারভাইজার শফিকুল ইসলামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরে। দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত সাতজনসহ ২০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।