বাংলাদেশে চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে
বাংলাদেশে চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। ১৯৯১-৯২ সময়কালে এই বৃত্তে থাকা মানুষের সংখ্যা ছিল ৪৪ শতাংশ। ২০১০ সালে এটা ২১ শতাংশে নেমে আসে। ৯০ দশকের তুলনায় পরবর্তী দশকে অধিক হারে দারিদ্র্য হ্রাস পেলেও দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ এখনও দরিদ্র। এর মধ্যে চরম দরিদ্র্র হল ১১ শতাংশ। অর্থাত্ একটি বড় জনগোষ্ঠী এখনও খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্যাসহ স্বল্প আয়ের বৃত্তেই রয়েছে।
গতকাল শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেকসই উপায়ে অতি দারিদ্র্য দূরীকরণ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তারা একথা বলেন। তারা মন্তব্য করেন, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এজন্য প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, জিইডি সদস্য ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব সফিকুল আজম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হুমায়ন খালিদসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ ভাগ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে নানা অরাজকতার কারণে তা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তবে অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুতেই সাড়ে ছয় ভাগের কম হবে না। উত্পাদনশীল খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেশে একটি শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণি তৈরি করা গেলে স্বাভাবিকভাবেই অতি দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমে আসে। দারিদ্র্য দূর করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের।
বিনায়ক সেন বলেন, বর্তমানে সাড়ে ৭৪ লাখ জনগোষ্ঠী চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। মানব উন্নয়ন সূচকের অনেকটিতে বাংলাদেশের ভালো অগ্রগতি রয়েছে। এরপরেও বাল্য বিবাহ রোধ, মা ও শিশুদের অপুষ্টি রোধসহ বিভিন্ন দিকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই সম্পূর্ণভাবে চরম দারিদ্র্যাবস্থা দূর করে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে। এর জন্য বাংলাদেশের গড়ে ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন।