ঋণের বোঝা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি লেবার পার্টির

Ed Milibandব্রিটেনের বিরোধী দল লেবার পার্টি নির্বাচনকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক ইস্যুতে জনগণের আস্থা ফেরানোর ওপর বিশেষ জোর দিয়ে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। ইশতেহারে প্রথম বাজেট থেকেই ‘প্রতি বছর ঘাটতি হ্রাস করা’ এবং নতুন করে সরকারের ঋণের বোঝা না বাড়ানোর জোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।
গতকাল সোমবার দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী এড মিলিব্যান্ড ইশতেহারটি প্রকাশ করার পর এক ভাষণে আশা প্রকাশ করেন, এতে জনগণের আস্থা ফিরবে এবং সামনের নির্বাচনে লেবার পার্টিরই জয় হবে। আর ডাউনিং স্ট্রিটেরও হাল ধরার সুযোগ পাবেন তিনি।
গত এক মাসের নির্বাচন জরিপে ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কনজারভেটিভ দলের সঙ্গে এড মিলিব্যান্ডের লেবার পার্টির এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এই দুই দলই হবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। মতামত জরিপে একদল একটু এগিয়ে থাকে তো, পরের বারই অপর দলটি একটু সামনে এগিয়ে থাকে। প্রত্যেকেই মরিয়া জনপ্রিয়তায় প্রতি মুহূর্তে অপরকে ছাড়িয়ে যেতে। ৭ মে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।
টনি ব্লেয়ার ও গর্ডন ব্রাউনের নেতৃত্বে ১৯৯৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে লেবার পার্টির গৃহীত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ব্যাপক সমালোচনা করে থাকেন কনজারভেটিভ দলের নেতারা। এ সময় লেবার পার্টি ১৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বাজেট ঘাটতি নিয়ে সরকার পরিচালনা করে।
তবে কনজারভেটিভ দলকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে এবং দেশের জনগণের আস্থা ফিরে পেতে ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ম্যানচেস্টারে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত এবারের ইশতেহারে বাজেট ঘাটতির ইতি না ঘটা পর্যন্ত প্রতি বছরই তা কমিয়ে আনার কঠোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ইশতেহারে উল্লেখিত প্রতিটি প্রতিশ্রুতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তাও বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে।
লেবার পার্টি ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দাবি করেছে, সাধারণ ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলোর ওপর কনজারভেটিভ দলের ঘোষিত পরিকল্পনা যতটা চাপ সৃষ্টি করবে, তাদের পরিকল্পনা সে তুলনায় বেশ কম চাপ সৃষ্টি করবে।
মিলিব্যান্ড ইশতেহার প্রকাশের ভাষণে বলেন, ‘লেবার পার্টি যে পালাবদল ঘটাতে চায় শুধু তাই নয়, তারা একটি দায়িত্বশীল দলও বটে। এবারের ইশতেহারে দলের এই মানসিক দিকটি ফুটে উঠেছে।’
তবে লেবার পার্টির ইশতেহারে বাজেট ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছে তাদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভসহ অনান্য পার্টির নেতারা। তারা মনে করছেন, লেবার পার্টি এ ক্ষেত্রে চাতুর্যের আশ্রয় নিয়েছে। মিলিব্যান্ডের দলটি ‘কেবল যত দ্রুত সম্ভব’ ঘাটতি হ্রাস করবে বলে উল্লেখ করেছে, কিন্তু কবে নাগাদ এ ঘাটতি হ্রাস সম্ভব হবে তার সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেনি।
বর্তমান জোট সরকারের ছোট অংশীদার লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের নেতা নিক ক্লেগ বলেছেন, ‘এড মিলিব্যান্ড এবং এড বলস ব্রিটেনের অর্থনীতি নিয়ে রুশ রুলেট (জুয়া) খেলতে চান।’ তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আসল কথা হলো, লেবার (পার্টি) লাগামহীন এবং মাত্রাতিরিক্ত ঋণের পরিস্থিতিতেই ফিরে যেতে চায়।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button