মধ্যপ্রাচ্যের লাখ লাখ শিশু শিক্ষা বঞ্চিত : জাতিসংঘ
মধ্যপ্রাচ্যের ১ কোটি ২০ লাখেরও শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। তেল সমৃদ্ধ অঞ্চলটিতে শিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও এসব শিশু শিক্ষা বঞ্চিত রয়ে গেছে। বাসস।
বুধবার জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ একথা জানায়।
সংস্থাটি তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকে চলমান যুদ্ধের কারণে যে সব শিশু স্কুলত্যাগে বাধ্য হয়েছে তাদেরকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে এই সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখে দাঁড়াত।
ইউনিসেফ ও জাতিসংঘের সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিস্টিকস বিগত এক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখার জন্য ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক পদক্ষেপের’ প্রশংসা করেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্র্থীদের উপস্থিতি বাড়লেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটা থমকে গেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার বয়সী ৪৩ লাখ শিশু এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার বয়সী ২৯ লাখ শিশু স্কুলে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
এছাড়াও ৫১ লাখ শিশু প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারছে না। এর ফলে এই অঞ্চলের ১ কোটি ২৩ লাখ শিশু শিক্ষার আলো পাচ্ছে না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ১৫ শতাংশ শিশুকে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি করানো উচিত।
ওই অঞ্চলের নয়টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যে দারিদ্র্যসহ বেশ কয়েকটি কারণে শিশুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরাও বই-খাতা ও স্কুলের খবর যোগাতে পারে না অথবা অভাবের তাড়নায় শিশুটিকে উপার্জনশীল কাজে দিয়ে দেয়।
এই অঞ্চলের মেয়েদের অবমূল্যায়িত করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘এই দেশগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু স্কুলে যায় না। সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র পল্লী এলাকার এই সব শিশু গৃহস্থালী কাজ করে।’
লিঙ্গ বৈষম্যই এক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মেয়েদেরকে অবমূল্যায়িত করা হয়। যেহেতু তাদেরকে উপার্জনশীল কাজের যোগ্য বলে মনে করা হয়না, তাই পরিবারের সদস্যরা তাদের লেখাপড়া শেখানোর প্রয়োজনও মনে করে না।’
এতে আরো বলা হয়েছে, অঞ্চলটিতে এইসব মেয়ে শিশুদের কম বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়।
অন্যান্য স্থানে হয় স্কুলে সহিংস হামলার আশঙ্কায় নয়তো সিরিয়া ও ইরাকের মতো যুদ্ধ কবলিত এলাকায় লাখ লাখ শিশু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। স্কুলগুলোতে প্রায়ই সহিংস হামলা চালানো হচ্ছে।