বিশ্ববাজারে ইসলামী পোশাকের ব্যবসা বাড়ছে
মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরিয়া-সম্মত ইসলামী পোশাকের বাজারও বিকশিত হচ্ছে। থমসন রয়টার্স এবং দিনার স্ট্যান্ডার্ড কমিশনের ‘বৈশ্বিক ইসলামিক অর্থনীতি ২০১৪-১৫’ রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৩ সালে মুসলিম ক্রেতারা পোশাকের জন্য প্রায় ২৬৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
অন্যদিকে, ২০১৩ সালে মার্কিন ক্রেতারা পোশাকের পিছনে ব্যয় করেছে ৩৯৫ বিলিয়ন ডলার।রয়টার্স ধারণা করছে, পোশাকের পেছনে মুসলিমদের খরচের এ সংখ্যা ২০১৯ সালে প্রায় ৪৮৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।ফলে আগামীতে বিশ্ববাজারে ইসলামি পোষাকের ব্যবসা এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে এবং চলতি শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই বৃদ্ধি ইসলাম ধর্মকে পরিণত করবে বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মে।
পোশাকের পেছনে মুসলিমদের খরচের এই বৃদ্ধি মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সরাসরি সর্ম্পকিত।
সম্প্রতি পিউ রিসার্চ সেন্টার নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ মুসলিম জনসংখ্যা বর্তমানের ১৬০ কোটি থেকে বেড়ে ৩০০ কোটিতে উন্নীত হবে।
২০০৬ সালে কুয়ালালামপুরে প্রথম শুরু হয় ইসলামিক ফ্যাশন উৎসব। ইসলামিক ফ্যাশন ফেস্টিভ্যালের নিজস্ব ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, কুয়ালালামপুরের পর নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে লন্ডন, জাকার্তা, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মন্টে কার্লো এবং অন্যান্য শহরে ১৭ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে এই উৎসব।
আনাস সিলউড নামে একজন ব্রিটিশ নাগরিক, যিনি ১৯৯০ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন, জর্ডানে গিয়ে ছোট আকারের একটি মুসলিম ফ্যাশনের ব্যবসা শুরু করেন।
ব্লুমবার্গকে তিনি বলেন, ‘নবমুসলিমদের সহায়তার জন্য আমি ২০০০ সালে খুবই ছোট পরিসরে মুসলিম ফ্যাশনের ব্যবসা শুরু করি। এখন আমি তিনটি স্টোরের মালিক এবং আগামী পাঁচ বছরে আরো দশটি স্টোর খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।’
ব্লুমবার্গ জানায়, দুবাইয়ে ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ট্যাক্স ফ্রি একটি বিশেষ ডিজাইন এরিয়া। আমিরাত চাচ্ছে এটিকে বিশ্বের ইসলামী ফ্যাশনের রাজধানীতে পরিণত করতে।
মুসলিমদের জন্য এখনো পর্যন্ত পোশাকের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কোনো ব্র্যান্ড নেই। এ ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দুবাইয়ের জন্য এটি একটি অপূর্ব সুযোগ।’
দুবাই ইসলামী অর্থনীতি উন্নয়ন কেন্দ্রের সদস্য ফ্যাশন ডিজাইনার আবদুল রহমান সাইফ আল ঘুরায়ির ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ইসলামী পোশাকের একটি আন্তর্জাতিক মানের ব্র্যান্ডের অভাব সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য একটি অনন্য সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’
রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, মুসলিম পোশাক ব্যবহারের দিক থেকে তুরস্ক বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। ২০১৩ সালে তুর্কিরা এই খাতে ৩৯.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ ক্ষেত্রে আরব আমিরাতের অবস্থান দ্বিতীয়। তারা এ খাতে ব্যয় করেছে ২২.৫ বিলিয়ন ডলার।
বিলাসবহুল ফ্যাশনের প্রতি মুসলিমদের অধিক সচেতনতার কারণে পোশাকের জন্য মুসলিমদের এই ব্যয়ের পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যে বিলাসবহুল ফ্যাশন সর্বব্যাপী রূপ লাভ করেছে।