এসএনপির সঙ্গে জোট বাঁধবেন না মিলিব্যান্ড
স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এসএনপি) নেতা নিকোলা স্টার্জিয়ুনের জোট গঠনের প্রস্তাব নাকচ করেছেন লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক টিভি-বিতর্কে মিলিব্যান্ড ওই প্রস্তাব নাকচ করেন। ৭ মে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নেতাদের নিয়ে এই টিভি বিতর্কের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ৭ মের নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি ছিল নেতাদের তৃতীয় ও শেষ টিভি বিতর্ক। বিবিসি এটি সরাসরি সম্প্রচার করে।
এড মিলিব্যান্ড বলেন, স্বাধীন স্কটল্যান্ড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিকোলা যুক্তরাষ্ট্রজ্যকে ভাঙতে চান। আর তিনি চান ঐক্যবদ্ধ যুক্তরাজ্য। জাতীয় স্বার্থে এমন দ্বিমুখী অবস্থানের কারণে নিকোলার সঙ্গে জোট গঠন সম্ভব নয়। গত পাঁচ বছর জোট বেঁধে ক্ষক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ (টোরি) দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দলের নেতা উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ এই বিতর্কে অংশ নেননি। মিলিব্যান্ড ও নিকোলার সঙ্গে অভিবাসনবিরোধী দল ইউকে ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির (ইউকিপ) নাইজেল ফারাজ, গ্রিন পার্টির নাটালি বেনেট এবং ওয়েলসের প্লেইড কিমরু দলের লিয়াম উড বিতর্কে অংশ নেন। বিরোধী এই পাঁচ নেতার চারজনই ডেভিড ক্যামেরনকে ক্ষক্ষমতা থেকে নামানোর পক্ষেক্ষ অবস্থান তুলে ধরেন। একমাত্র নাইজেল ফারাজ কনজারভেটিভ দলের প্রতি সমীহভাব পোষণ করেন। নাইজেল ফারাজ স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে স্বাস্থ্যসেবা, বেকারত্ব ও বসতবাড়ির সংকটসহ সব সমস্যার জন্য অভিবাসনের আধিক্যকে দায়ী করেন। তবে তার সঙ্গে জোর গলায় দ্বিমত পোষণ করেন বাকি চার নেতা।
অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত গ্রিন পার্টির নেতা নাটালি বেনেট বলেন, যুক্তরাজ্যে প্রতি চারজন চিকিৎসকের একজন অভিবাসী এবং স্বাস্থ্য সেবা খাতের ৪০ শতাংশ কর্মী অভিবাসী সম্প্রদায়ের। ওয়েলসে চিকিৎসক সংকটের কথা উল্লেখ করে লিয়াম উড বলেন, যুক্তরাজ্যে অভিবাসনবিরোধী যে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, এতে কোনো বিদেশি চিকিৎসক দেশটিতে যেতে চাইবে না।
এসএনপির নেতা নিকোলা স্টার্জিয়ন বলেন, ব্রিটিশ নাগরিকেরা অন্য দেশে গেলে যেমন আচরণ আশা করেন, অভিবাসীদের প্রতিও সেরকম আচরণ করা উচিত। শিক্ষার্থী ভিসায় কড়াকড়ির কারণে দেশটির ইউনিভার্সিটিগুলো আর্থিক সংকটে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মিলিব্যান্ডের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তিনি (নিকোলা) প্রধানমন্ত্রী হলে শিক্ষার্থী ভিসার সঙ্গে দুই বছর কাজের সুযোগ (পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হবে। জবাবে মিলিব্যান্ড অভিবাসনের যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণের কথা বলেন। টোরি সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসার ঘোষণা না দেওয়ায় সমালোচনার শিকার হন মিলিব্যান্ড। তিনি সংখ্যাগরি কর্মজীবী শ্রেণির পক্ষে তাঁর দলের প্রতিশ্রুতি ব্যাখ্যা করেন। এসএনপি, গ্রিন ও প্লেইড কিমরু দলের নেতা যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করে ওই অর্থ মানব কল্যাণে ব্যয়ের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। মিলিব্যান্ড এবং ফারাজ এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাবের প্রসঙ্গ টেনে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। বিভিন্ন জরিপের ফলে আভাস দেওয়া হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিতা পাবে না। এ কারণে যুক্তরাজ্যের ছোট দলগুলোর বেশ কদর বেড়েছে।