সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হচ্ছে
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চার দিন অর্থাৎ ভোটের দু’দিন আগে ও একদিন পরে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে। রোববার বিকেলে কমিশনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগে রোববার সকালে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসে কমিশন। এরপর বিকেলে কমিশনের জরুরি সভা ডাকেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
সূত্র জানায়, বৈঠকে সেনা মোতায়েন ছাড়াও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু সেনা মোতায়েন নয়, তিন সিটির প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরকে ২৫ এপ্রিল রাত থেকেই নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে।
ইসি সচিবালয় সূত্র জানা গেছে, কমিশনের নির্দেশনার পরপরই সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-১ শাখার কর্মকর্তারা প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
সোমবার সকালেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হবে।
সেনাবাহিনীর কতজন সদস্যকে মাঠে নামানো হবে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলীকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিন সিটির তিন রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এ বিষয়ে প্রস্তাব চূড়ান্ত করবেন।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ২০১২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
এর আগে ড. শামসুল হুদা কমিশনের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ইসির পক্ষ থেকে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তাতে সাড়া দেয়নি সরকার। তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন থেকে মাঝপথে সরে দাঁড়ায়। বর্তমান কমিশনের অধীনে রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, গাজীপুর ও রংপুরসহ অনেক সিটি নির্বাচন সেনা মোতায়েন ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি না জানালেও বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এ ছাড়া কমিশন ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। ওই সভাগুলোতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কাউন্সিলর প্রার্থী সেনা মোতায়েনের পক্ষে মত দেন।
ব্যালট ছিনতাই ঠেকাতে গুলির নির্দেশ :বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও অবাধ রাখতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন সিইসি। সভায় উপস্থিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রধানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের লোকজনের অবহেলা ক্ষমা করা হবে না। কেউ জোর করে কেন্দ্রে ঢুকলে দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করে প্রতিহত করতে হবে। আপনাদের অস্ত্র দেওয়া হয়েছে পকেটে রাখার জন্য নয়, অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে।