নেপালে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে
নেপালে শনিবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সর্বশেষ সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যা আরো তিনগুণ বাড়তে পারে বলে নেপালের সরকার আশঙ্কা করছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২ হাজার ৯৮ জন নিহত হয়েছেন। বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছে অনেকে। এ ছাড়া রাজধানী কাঠমান্ডু ও সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
নেপালের তথ্যমন্ত্রী মীনেন্দ্র রিজ্জাল বলেছেন, এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় তার দেশের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।
ভেঙে পড়া অসংখ্য ভবনের নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে আছেন। অনেককেই গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আহতের সংখ্যা এতো বেশি যে হাসপাতালগুলোতে জায়গা হচ্ছে না। অনেককেই খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রাত নেমে আসায় অনেককেই খোলা রাস্তায় থাকতে হচ্ছে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও পোখারার মাঝখানে লামজুং এলাকায় ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৯। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলে ঠিক কতোটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো অজানা।
কাঠমান্ডু, ভক্তপুর, গোরখা, লামজুং ইত্যাদি ঘনবসতিপূর্ণ জায়গাগুলোয় ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নেপাল ছাড়াও সমগ্র উত্তর ভারত, চীনের তিব্বত অঞ্চল, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়।
রাজধানী কাঠমান্ডুর ঐতিহ্যবাহী ধারাহারা টাওয়ারসহ বহু ভবন এবং অনেকগুলো প্রাচীন মন্দির ধ্বংস হয়ে গেছে।
রাজধানীর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গ এলাকায় ভূমিকম্পের কারণে হিমবাহে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বিদেশি পর্যটক আর শেরপারাও রয়েছেন।
হিমালয় অভিযানে যাওয়া পর্বতারোহীদের একটি ‘বেস ক্যাম্পের’ একাংশ বরফের ধসে চাপা পড়েছে। ভূমিকম্পের কারণে মাকালু পর্বত থেকে বড় বড় পাথর এবং বরফের টুকরো নেমে আসছে।
এ ভূমিকম্পে ভারতের নানা স্থানে অন্তত ৪০ জন এবং বাংলাদেশে অন্তত ৪ জন নিহত হওার খবর পাওয়া গেছে। তিব্বতে নিহত হয়েছেন ৬ জন।
ভূমিকম্পের পর নেপালকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ। এর মধ্যেই ওষুধ, উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে ভারতের কয়েকটি বিমান নেপাল পৌঁছেছে। বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকর্মীদের সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে।