নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে ঢাকাবাসীর প্রতিক্ষিত ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাপ্ত তথ্য ও বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদন ও অনলাইন নিউজপোর্টালের খবর হতে দেখা যাচ্ছে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।
তিন সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল দাবি করে সিইসি বলেন, তড়িৎ হস্তক্ষেপের কারণে বেশিরভাগ বড় ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। আমি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, প্রার্থীদের সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলেছি। তারা কেউ অভিযোগের কথা জানাননি। তারা ভয়ভীতির সম্মুখীন হননি বলে জানাননি। কয়েকটি দেশের কূটনীতিক পর্যবেক্ষণ করে তাদের মতামত গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেছেন। তারাও এ নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলেছেন।
তিনি আরো বলেন, কতিপয় কেন্দ্রের অনভিপ্রেত খবর আমাদের কাছে এসেছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে তিনটি কেন্দ্রে পরিস্থিতি প্রিজাইডিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমলাপুর শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের আশরাফ মাস্টার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় শ্যামপুর এবং ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুরিটোলা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব কেন্দ্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসায় পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হয়।
নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা আরও একদিন মোতায়েন থাকবেন। তাদের সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। সকল প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
অনিয়মের অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীসহ চার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলভিত্তিক নির্বাচন নয়। প্রার্থীভিত্তিক নির্বাচন। আমাদের কাছে এ পর্যন্ত কেউ বর্জন করার বা অভিযোগের দরখাস্ত করেননি। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা তাদের সব অভিযোগ আমলে নিয়েছি। যেসব কেন্দ্রে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে সেগুলোতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছি। সেগুলোতে প্রয়োজনে পুনরায় ভোট হবে।
জোনায়েদ সাকীর অভিযোগের প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমরা অনেক অভিযোগ পেয়েছি। এগুলো সবই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছি। যেগুলোতে প্রমাণ পাওয়া যায়নি সেগুলোতে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
পুলিশ বাহিনী সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে-সাংবাদিকদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সকালেই অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে সব কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি। তাদের পর্যবেক্ষণ নীতিমালা পড়িয়ে শুনিয়েছি। আমরা সাথে সাথে নির্দেশ দিয়েছি। আপনারা কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
সেনাবাহিনী ডাকার মত পরিস্থিতি ছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কেন্দ্র বন্ধ করা আর সেনাবাহিনীকে তলব করার মধ্যে পার্থক্য আছে। যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, যারা শান্তি শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য। তার আগে যদি তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে এটা তলব করার প্রয়োজন হয় না।
নির্বাচন নিয়ে কতটুকু সুখী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণনা চলছে। ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোটাররা নিরাপদে চলে গেছেন। এটা আমাদের জন্য বড় শান্তির বিষয়।