রাবিনা খানকে টাওয়ার হ্যামলেসট মেয়র প্রার্থী ঘোষণা
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের পক্ষ থেকে মেয়র প্রার্থী হলেন কাউন্সিলর রবিনা খান।
বৃহস্পতিবার ‘ডিফেন্ড ডেমোক্রেসি ইন টাওয়ার হ্যামলেস’ শিরোনামে পাবলিং মিটিংয়ে আগামী ১১ জুন অনুষ্ঠিত টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসাবে কাউন্সিলর রবিনা খানের নাম ঘোষণা করেন লুৎফুর রহমান। একই সঙ্গে টাওয়ার হ্যামলেটস ইলেকশন মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করবেন বলেও ঘোষণা দেন এ মামলায় দোষি সাব্যস্ত মেয়র লুৎফুর রহমান। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ইস্ট লন্ডনের ওয়াটার লিলিতে মিটিং শুরু হয়।
তেমন কোনো আয়োজন ছিলোনা। তারপরও পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলির সমাবেশে আড়াই তিন হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটে। শুধুমাত্র লুতফুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটাতে সাধারন মানুষ নিজস্ব চেতনা নিয়েই ছুটে আছেন সমাবেশে।
তারা বলেন, লুতফুর রহমানের লড়াই এখন আমাদের লড়াই। কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের লড়াই। তার দু:খ, ক্ষোভ এখন আমাদের দু:খ। আমরা একেকজনই আজ থেকে লুতফুর। বিশ্ব বাংগালীর গর্ব বৃটেনের প্রথম এশিয়ান এবং প্রথম মুসলিম নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমানকে আইনের মাধ্যমে অপসারনের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে পাশে থাকতে চাই। কথাগুলো বলা হয়েছে,ডিফেন্ড ডেমোক্রেসি, ডিফেন্ড টাওয়ার হ্যামলেটস -এই শিরোনামের এক সমাবেশে।
এতে স্থানীয় ও জাতিয় পর্যায়ের বক্তারা বলেন, লুতফুর রহমানকে আইনি লড়াই, আপিলের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমরা শুধু সহযোগিতা করতে চাইনা, আমরা যতোটুকু সম্ভব আর্থিক ফান্ড গঠনেও পাশে থাকতে চাই। একই সাথে নির্বাচন হলে, লুতফুর রহমানের পছন্দের প্রার্থীকে বিপুল ভাবে বিজয়ী করে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে।
উল্লেখ্য সমাবেশের শেষ দিকে লুতফুর রহমান হাউজিং ক্যাবিনেট সদস্য কাউন্সিলার রাবিনা খানকে তার গ্রুুপের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি বলেন, রাবিনা খান ইতমধ্যে কাউন্সিল প্রশাসনে যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা দুই বার বৃটেনে সবেচেয়ে বেশী সোস্যাল হাউজ নির্মান করে ৫০মিলিয়ন পাউন্ড পুরস্কৃত হয়েছি। এক্ষেত্রে রাবিনা খানেরও অনন্য অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, রাবিনা খান একজন সাহসি ও সম্ভাবনাময় নেত্রি। সেই ২০১০ সালে জাস্টিসের পক্ষ নিতে গিয়ে তিনি তিনি লেবার কাউন্সিলারের পদ ছেড়ে আমার সাথে যোগ দেন এবং আজো আছেন।
সবাবেশে বলা হয়, কমিউনিটির সংগঠনকে বেশি ফান্ডিং দিয়েছেন-এই অভিযোগে লুতফুর শুধু আজ বিপদে নয়, এটাকে ঘোষ হিসেবে দেখা হয়েছে। অথচ কোথায় লুতফুর রহমান বা তার পরিবারের বা নিজের কেউ ব্যক্তিগত ভাবে কোনো আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন এটা প্রমান করতে পারেনি। একই ভাবে ইমামরা বিবৃতি দিয়ে ভালো কাজের কারনে সমর্থন জানিয়েছেন, ধর্মীয় কোনো কারনে নয়, কিন্তু এটাকে আইনি ভাবে অপরাধ প্রমান করা হয়েছে। বাংলামিডিয়ার যে সহযোগিতা সেটিকেও বলা হচেছ ঘোষের বিনিময়ে। এর চেয়ে দু:খের অপমানের এবং ক্ষোভের কী থাকতে পারে কমিউনিটির কাছে। লানচন ক্লাবে যদি সহযোগিতার জন্য দুর্নীতবাজ হতে হয়, তাহলে তো আমরাও দুর্নীবাজ হতে চাই।
সমাবেশে লুতফুর রহমান বলেন, ৩৭ হাজারের বেশী ভোটার আমাকে ভোট দিয়েছেন, আমাদের সফল কর্মসূচীর জন্য। ভোট জালিয়াতি আর বর্ণববাদ কিংবা অন্যায় ধর্মীয় প্রভাবের জন্য আমাকে ভোট দেয়া হয়নি। হাউজিং, শিক্ষা, চাকুরী ক্ষেত্রে আমরা যে রেকর্ড ব্রেকিং কাজ করেছি সেটি বিবেচনা করেই মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছে। কিন্তু এই এলাকার চারজন রাজনীতিক মামলা করে আমাদের অর্জনকে মুছে দিতে চাইছে-কিন্তু মনে রাখার দরকার আই এম ফলেন বাট নট ব্রোকেন। অথ্যাদ আমি অপসারিত হয়েছি কিন্তু ভেংগে যাইনি। টাওয়ার হ্যামলেটসেই আমার ঘর। আমি এখান থেকে কোথাও যাবোনা এবং কেউ আমাকে থামাতেও পারবেনা।
সমাবেশে বলা হয়, রায়ের অন্যতম বিষয় ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে ভোট বাগানোর চেষ্টা, এতেও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। আর ১০১ ইমাম যেভাবে গনতান্ত্রিক ভাবে ভোট প্রদানের আহবান জানিয়েছেন, সেভাবে অন্য ধর্মের নেতাদেরও আহবান জানানোর নজির আছে। এতে অন্যায় ভাবে ধর্মীয় প্রভাব কী ভাবে হলো আমরা বুঝতে পারিনা।
লুতফুর রহমানের প্রতি এখোনো সমর্থন আছে এবং তার অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিভিন্ন বর্ণ-ধর্মের নারী-পুরুষের ঢল নামে পূর্ব লণ্ডনের ওয়াটার লিলিতে। ইস্ট লন্ডনের ওয়াটার লিলির দুই হলে উপচে পড়া জনতার ভীড় মুহুর্মুহু শ্লোগান আর করতালির মাধ্যমে মেয়র লুৎফুর রহমানের প্রতি দাড়িয়ে তাদের শ্রদ্ধা জানান।
বক্তারা বলেছেন, বৃটেনের একমাত্র মুসলিম ও বিএমই মেয়র লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে একটির পর একটি আঘাত মেনে নেয়া যায়না। রাজনীতি ও মিডিয়া ইত্যাদি নানা পর্যায় থেকে টাওয়ার হ্যামলেটস এর প্রথম এই নির্বাহী মেয়রকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালানো হচেছ। আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে, জেগে উঠতে হবে।
ইউনাইটেড এগেইনিস্ট ফেসিজম নেত্রি সাবি দেলু ও স্পোর্টস ব্যক্তিত্ব সুরত মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে লুতফুর রহমান ও মেয়র প্রার্থী কাউন্সিলার রাবিনা খান ছাড়াও এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভিন্ন ধর্ম, মত ও পথের স্থানীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ স্থানীয় প্রভাবশালী ইউয়িন নেতারা বক্তৃতা করেন।
বিশেষ বক্তা ছিলেন লেবারের এনইসি সদস্য ক্রিস্টিন সোক্রফট,স্টপ দ্য ওয়ার কোয়ালিশনের নেত্রি হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত লিন্ডসি জার্মান,গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন নরুল ইসলাম মাহবুব, হ্যারো কাউন্সিলের সাবেক মেয়র নানা আসান্টি,ইউনাইট ইউনিয়নের চীফ অব স্টাফ আন্ড্রো মারি, ফান্ডিং কার্ট বিরোধী প্রধান সংগঠন পিপুল এসেমলির কনভেনার জনরিস, বার্মিংহামের সুপরিচিত সোস্যাল জাস্টিস একটিভিস্ট সালমা ইয়াকুব, বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ও পার্টটাইম জাজ পিটার হারবাট, টাওয়ার হ্যামলেটস ইউনিসন সেক্রেটারী জন মেককোলান, লন্ডন মেয়রের সাবেক কালচারাল এডভাইজার জোডি উডওয়ার্ড।
সবাবেশের অন্যান্য বিশেষ বক্তারা হলেন, ৩শ হাজার সদস্যধারী ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব টিচার্স (এনইউটি) এর নির্বাহী সদস্য এলেক্স কেনি, লোকাল ক্যাম্পেইনার লেবার পার্টির সাবেক বারা চেয়ার লিল কলিন্স, ইউনাইটেড ইস্ট এন্ড চেয়ার লেখক ড. গ্লিন রবিন্স,ভয়েস ফর জাস্টিস নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী,জিএসসি-র সাবেক চেয়ার ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, কমেডিয়ান এন্ড রাইটার অভা বিডাল, সোমালি কমিউনিটি লিডার সলিসিটার আবদি রাশিদ, কমিউনিটি নেতা মহিদুর রহমান, এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশী সলিসিটার্স এর সাবেক প্রেসিডেন্ট সহুল আহমদ, স্থানীয় কমিউনিটি নেতা জন আলিসন ও সেন রিলো রিজকা, ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টনস (এন ইউএন) এর ব্ল্যাক স্টুডেন্ট অফিসার আরোন কেলিসহ আরো অনেকে।
লুতফুর রহমান বলেন, আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। আমাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে। তিনি জানান, জুডিশিয়াল রিভিউ তথা এ্যাপিলের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচেছন। তিনি বলেন, আমরা একমাত্র বারা ফ্র্রি হোম কেয়ার সার্ভিস চালু রেখেছি। আমরাই লন্ডনে প্রথম লন্ডন লিভিং ওয়েজ চালু করি। আমরা জিরো আওয়ার কান্ট্রক্ট এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই যখন এড মিলিবান্ড এ নিয়ে ভাবেনওনি। তাই আমাদের নতুন মেয়র প্রার্থী সেই কর্মসূচীকে অব্যাহত রাখবেন।
হাউজিং ক্যাবিনেট সদস্য ও মেয়র পদ প্রার্থী কাউন্সিলার রাবিনা খান বলেন, আমি কখোনো ভাবিনি যিনি আমাদেরকে আদর্শ ও উন্নয়নের রাজনীতিতে যুক্ত করেছেন সেই লুতফুর রহমানকে বাদ দিয়ে আমি মেয়র প্রার্থী হবো। কেউই মেনে নিতে পারছেনা লুতফুর রহমানের অপসারন।
কিন্তু এটা খুবই আবেগঘন বাস্তবতা। তবে আমি আপানের সকলের সহযোগিতা নিয়ে লুতফুর রহমানের কর্মসূচীকে নিশ্চিত করতে চাই। সাহস নিয়ে, সমাজ, কমিউনিটি এবং সকল কাউন্সিলারদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি সাহসের সাথে বলতে চাই আমি বাংলাদেশী গর্বিত। সেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে আমার জন্ম। আর আমি গর্বিত মুসলিম হিসেবে এবং গর্বিত বৃটিশ হিসেবে। আমাকে সুন্দর সুন্দর মানবিক গুনের কথা শিখিয়েছেন আমার মা-বাবা যাই আমার কাছে বৃটিশ ভ্যুল।
লেবার পার্টির এনইসি সদস্য ক্রিস্টিন শক্রফট সাম্প্রতিক এই রায়ে মর্মাহত । মামলা চলাকালীন তিনি লুৎফুর রহমানের পক্ষে সাক্ষীও প্রদান করেন। সাক্ষী প্রদানকালে তিনি লুৎফুর রহমান কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা রাখছেন দাবী করার পাশাপাশি জন বিগসকে ডিভাইসিভ বা বিভক্তি সৃষ্টিকারী হিসেবেও উল্লেখ করেন। লুৎফুর রহমানের পদচ্যুতের পর তাকে ডিফেন্স করার জন্য ইতোমধ্যে আহুত বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার নাম এসেছে। এমনকি যতোটুকু সম্ভব লুৎফুর রহমানকে আর্থিক সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আর এ জন্য তিন জনের নামে ‘লুৎফুর রহমান লিগ্যাল ফাণ্ড’ নামে যে একাউণ্ড খোলা হচ্ছে সেই একাউন্ট হোলডার একজন ক্রিস্টিন শক্রফট। তিনি বলেন, আমাদের ফাইট করতে হবে। জাস্টিস এবং ফ্রিডম অব স্পিচ এর নীতিকে যথার্থ ভাবে রক্ষা করতে হবে। আমি আমার ছেলেকে এই সমাবেশে নিয়ে এসেছি, যাতে আগামী প্রজন্ম সাহস নিয়ে সত্যের পক্ষে দাড়াতে পারে।
ব্রিটিশ পলিটিক্যাল এক্টিভিস্ট, ব্রডকাস্টার ও রাইটার পিপুল এসেমলি নেতা জন রীস লুৎফুর রহমানের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ওইদিনই তার কাউন্টারফায়ার নামক ওয়েবসাইটে একে টাওয়ার হ্যামলেটসে সত্যিকারের ইলেক্ট্রোরাল ফ্রড শুরু হয়েছে বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাচন সংক্রান্ত মামলাটি শুরু থেকেই একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট ছিলো। তিনি বলেন, এই জাজের বামিংহামের একটি রায় আপিলে ভুল প্রমানিত হয়েছিলে। সেই জাজই একাই ৩৭ হাজার ভোটে নির্বাচিত লুতফুরের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিলেন।
মেয়র লুতফুরের পাশে দাড়াতে হবে, আমরা গনতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন করে যাবো। কারন লুতফুর শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটি অসাধারন।
জিএসসি-এর চেয়ারপার্সন নরুল ইসলাম মাহবুবু বলেন, ক্যান লিভিংস্টন যখন জিএলসি-র নেতা ছিলেন তখন মার্গারেট থেচার ক্যানের বিরোধীতা করতে গিয়ে খোদ জিএলসি ভেংগে দেন। কিন্তু ক্যান ছিলেন জনগনের নেতা। দুই দশক পরে আবারো জিএলএ তৈরী করা হলে জনগনই তাকে প্রথম মেয়র নির্বাচিত করে। ঐসময় লেবারও তার বিরুদ্ধে ছিলো। লুতফুর রহমানও পিপুলস মেয়র। তাকে আইন দিয়ে আটকে দেয়া যায়,কিন্তু তার আদর্শ বন্ধ করা যাবে না। আমরা মনে করি,একজনের জাজের সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো কেইস ছিলো না এতো বিশাল এই মামলাটি। একাধিক জাজ এর মাধ্যমে শুনানী আয়োজনের দরকার ছিলো।
মেয়র লুতফুর হচেছন আমাদের ঐক্যের প্রতিক। তিনি হচেছন পিপুলস মেয়র। আমারা তার প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করে প্রমান করবো তিনি যে সত্য ও ন্যায়ের পথে ছিলেন এবং আছেন।
বলেন, আমি শুধুমাত্র নিজের পক্ষ থেকে লুতফুরের প্রতি সমর্থন জানাতে আসিনি আমি আমাদের লিডার লেন মেক ক্লাসকিরও সমর্থন বক্তব্য নিয়ে এসেছি। আমাদেরকে ঐক্যবন্ধ হবে, লিগেল ফাইট চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে দেশজুড়ে চলা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
বামিংহাম থেকে আগত নেত্রি সালমা ইয়াকুব বলেন, লুতফুরের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার মাধ্যমেই এস্টাবলিস্টম্যান্টকে একটি ম্যাসেজ দিতে হবে। আর লুতফুরের মতো সাহসি মানুষ যেনো আজ বিপদে পড়ে ভয় না পায় সে জন্য আমাদেরকে পাশে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চোখের সামনে লুতফুরের অবদান দেখতে পাচিছ। আমি এর অন্যতম স্বাক্ষি। তাই তাকে কেউ স্তব্দ করতে পারবে না। মুছে ফেলতে পারবে না।
বাংলাদেশী সলিসিটার্স এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট সলিসিটার সহুল হোসেন মকু বলেন, লুতফুর রহমান আমাদের এসোসিয়েশনের সম্মানিত প্রেট্রন। আমরা গর্ব করেই তাকে এই সম্মান দিয়েছি। আশা করি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে এই আমরা আমাদের সম্মানকে ফিরিয়ে আনতে পারবো।
আতাউর রহমান বলেন, শুধু টাওয়ার হ্যামলেটস নয় পুরো বৃটেনের কমিউনিটি আজ হতাবাক । তারা সবাই লুতফুরের পাশে থাকতে চান। তার মর্যাদা হানী মেনে নিতে পারেন না।
সাবেক লণ্ডন মেয়র কেন লিভিংস্টোন-এর ভিডিও ম্যাসেজ প্রদর্শন করা হয় সমাবেশে। তিনি বলেন, যেসব প্রবাবশালী মিডিয়া এবং রাইটউইংহার লুতফুরের বিরুদ্ধে লেগেছে তারা আমার বিরুদ্ধেও সবসময় ছিলো। তারা আমাকেও দুর্ণীতিবাজ বলতো।রায় ঘোষণার পরপরই এক প্রতিক্রিয়ায় একে গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি হিসেবে মন্তব্য করেছেন তিনি। এলবিসি রেডিওতে দেয়া প্রতিক্রিয়া কেন লিভিংস্টোন হাইকোর্টের রায়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘লুৎফুর রহমান যদি আইন ভঙ্গ করেই থাকেন, তবে পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করলো না? মামলার বিচারক রিচার্ড মাওরি কিউসি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘(তিনি একজন) অনির্বাচিত আমলা হয়ে একটি নির্বাচনের ফলাফল তিনি উর্ধ্বে দিয়েছেন। আমার মনে হয় বিষয়টি অত্যন্ত অত্যন্ত দুশ্চিন্তার’। তিনি আরো বলেন, আমি দীর্ঘ দিন থেকে লুতফুরকে জানি। তিনি লেবারের প্রগ্রেসিভ কর্মসূচী বাস্তবনায়নে কাজ করেন এবং বিপুল জনসমর্থন রয়েছে এ কারনে। তাকে কখোনো অন্যায় ( ডোজি কিছু করতে) করতে দেখিনি।
বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান, ব্রাডফোর্ড ওয়েস্টের এমপি জর্জ গ্যালওয়ে কোর্টের রায়কে লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনিও মেয়রর সামাবেশের জন্য ভিডিও ম্যাসেজ দিয়েছেন। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাথে দেয়া তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় লুৎফুর রহমানকে কৃত্রিম অভিযোগে মেয়র অফিস থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, রায় প্রমাণ করে এদেশের মুসলমানদের ভিন্ন চোখে দেখা হচ্ছে। এতে করে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে মুসলমানরা উৎসাহ হারাবেন। আর এর পেছনে ভ্রান্ত ভূমিকা রাখার জন্য আসন্ন ৭ মে’র নির্বাচনে মুসলিম ভোটারদের কাছে লেবারকে উচ্চমূল্য দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন জর্জ গ্যালওয়ে।
বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বিসিএ’র প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিটি নেতা পাশা খন্দকার মিডিয়ায় এক মন্তব্যে বলেছেন,কোর্টের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা ব্যক্ত করে বলেছেন, লুৎফুর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটস বারায় বৃটেনের বিএমই কমিউনিটি থেকে একমাত্র নির্বাচিত নির্বাহী মেয়র ছিলেন। এধরনের একজন ব্যক্তিকে কোনো ধরনের ক্রিমানাল অফেন্সের সুস্পষ্ট প্রমাণ ব্যতিরেখে দোষী সাব্যস্ত কিংবা পদচ্যুত করা হলে তা গণতন্ত্রের জন্য শুভনীয় হবে না। তিনি বলেন, লুৎফুর রহমান সবসময় ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করে যাচ্ছেন তাই তাকে সবধরনের সহায়তার জন্য কমিউনিটির সবার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা প্রয়োজন। পাশা খন্দকার ইলেক্ট্রোরাল কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে জুডিশিয়াল রিভিউর ওপর জোর দেন।