সিলেটে সাইফুর রহমান শিশুপার্ক হয়ে যাচ্ছে ন্যাচারাল পার্ক

চার দলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের প্রচেষ্টায় সিলেটে অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। সেসব প্রকল্পের কয়েকটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। তার মৃত্যুর পর সিলেটে উন্নয়নের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের কেউই সাইফুর রহমানের উন্নয়নের ধারে কাছে আসতে পারেননি। উপরন্তু গত ছয় বছরে কয়েকটি স্থাপনা থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। সর্বশেষ সিলেট নগরীর এম সাইফুর রহমান শিশুপার্কের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, এসব করে সিলেট বিভাগের উন্নয়নের রূপকার এম সাইফুর রহমানের নাম সিলেটবাসীর হৃদয় থেকে কখনো মুছে ফেলা সম্ভব হবে না।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চার দলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ঐকান্তিক ইচ্ছায় দণি সুরমার আলমপুরে ৩ একর ৭৭ শতক জায়গার ওপর শিশুপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পার্কের নামকরণ করা হয় এম সাইফুর রহমানের নামে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছিল সিলেট সিটি করপোরেশন। প্রথম দফায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পার্কের জন্য ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত ওই বরাদ্দ থেকে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সিটি করপোরেশন। এ টাকায় জমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাট, অভ্যন্তরীণ লাইটিং, গাছের চারা লাগানো এবং সীমানা প্রাচীর ও টিকিট কাউন্টার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরো কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় ২০০৮ সালের জুলাইয়ে বরাদ্দের ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ফেরত যায়। টাকা ফেরত যাওয়ায় রাইড বসানো ও সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের সঙ্গে পার্কের সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি।
এর পর থেকেই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে সেটি। সাত বছর পর সেই পার্কটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। এতে সায় দিয়েছেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এ ব্যাপারে তিনি একটি ডিও লেটার প্রেরণ করেছেন বলে সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে। তবে চিঠিটি এখনো সিটি করপোরেশনের হস্তগত হয়নি। অর্থমন্ত্রীর ডিও লেটারের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নূর আজিজুর রহমান জানান, পার্কটি চালুর ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। চিঠিটি ২-১ দিনের মধ্যে তাদের হস্তগত হবে বলে তিনি আশা করছেন।
তিনি জানান, পার্কটি চালু করতে খুব বেশি কিছুর দরকার নেই। সব কিছুই গোছানো আছে। এখন পাঁচ-সাত কোটি টাকা হলেই রাইড বসিয়ে পার্কটি চালু করা যাবে।
এ দিকে পার্কটি থেকে এম সাইফুর রহমানের নাম বাদ দেয়ায় সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থাপনা থেকে আওয়ামী লীগ সরকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম যেভাবে বাদ দিচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় সিলেটের স্থাপনা থেকে এম সাইফুর রহমানের নাম বাদ দেয়া হচ্ছে। এর আগে রিকাবীবাজারে অডিটোরিয়াম থেকেও সাইফুর রহমানের নাম বাদ দেয়া হয়। তিনি বলেন, এভাবে স্থাপনা থেকে নাম বাদ দিয়ে জনগণের অন্তর থেকে সাইফুর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button