গাজার মানুষের দুর্দশা সহ্য করার মতো নয় : জিমি কার্টার
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ফিলিস্তিন সফরের পর গাজা উপত্যকার মানুষের দুর্দশা দেখে ‘সেখানকার পরিস্থিতি সহ্য করার মতো নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা কার্টার গত শনিবার নরওয়ের সাবেক পধানমন্ত্রী গ্রো হারলেম ব্রান্ডল্যান্ডসহ একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে পশ্চিম তীর সফর শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমরা সেখানে যা দেখেছি তা সহ্য করার মতো নয় এবং এসব দেখে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আরো জোরালোভাবে কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়েছি।
‘ভয়ংকর যুদ্ধ শেষ হওয়ার দীর্ঘ আট মাস পরও গাজায় ধ্বংস করে দেয়া একটি বাড়িও নতুন করে তৈরি করা যায়নি। সেখানকার মানুষ জন যে সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার কথা তা পারছে না।’
প্রতিনিধি দল নিয়ে কার্টার সরাসরি গাজা উপত্যকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় যেতে পারেননি।
জেরুজালেমে সাংবাদিকদের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি গাজা এবং পশ্চিমতীর নিয়ে ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র গঠনে কাজ করে যেতে এখনো দৃঢ় পতিজ্ঞ।
গত বছরের জুলাই মাসে হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যে ৫০ দিন ধরে চলমান এক অসম যুদ্ধে দুই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনী নাগরিককে হত্যা করে ইসরাইলী বাহিনী। নিহতদের একটি বড় অংশ ছিল শিশু। এ সময় গাজার কয়েক হাজার বাড়িঘর-স্কুল-হাসপাতাল ধ্বংস করে দেয়া হয়।
পশ্চিমতীর সফরের সময় জিমি কার্টার ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে দেখা করেন এবং ইয়াসির আরাফাতের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এদিকে ইসরাইলী প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিনের সাথে সাক্ষাতের অনুরোধ করলেও রিভলিন তা প্রত্যাখ্যান করেন। দেশটির নেতারা কার্টারকে বহু আগে থেকেই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির প্রতি বৈরী হিসেবে বিবেচনা করে আসছেন।
তার শাসনামলে আরব-ইসরাইল শান্তি চুক্তি করিয়ে দিলেও ২০০৬ সালে ‘প্যালেস্টাইন: পিস, নট অ্যাপার্থেইড’ নামে একটি বই লেখার পর ইহুদিবাদী ইসরাইলের অনেকে তার উপর ক্ষুব্ধ হন। এ ছাড়া পশ্চিমাদের কাছে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে পরিচিত হামাসসহ অন্যান্য ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সাথে কার্টার প্রায়ই দেখা করেছেন।
গত শনিবারের সফরে তিনি গাজার সীমান্তে বসবাস করা ইসরাইলের বাসিন্দাদের সাথেও কথা বলে তাদের বক্তব্য শুনেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে দেখা করার কোনো ইচ্ছা তার নেই বলেও জানিয়ে দেন। কার্টার বলেন, এটাকে আমরা খামাখা সময় নষ্ট হিসেবেই মনে করছি। যতক্ষণ তিনি এই লোক (নেতানিয়াহু) আছে ততক্ষণ দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধান সম্ভব নয় এবং ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রও হবে না।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে হামাসের অনুরোধের অপেক্ষায় আব্বাস : জিমি কার্টার আরো জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাকে বলেছেন প্রেসিডেন্সিয়াল এবং আইনসভার নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে তিনি হামাসের লিখিত অনুরোধের অপেক্ষায় আছেন।
আব্বাস হামাসের কাছ থেকে একটি লিখিত অনুরোধ নিয়ে আসতেও কার্টারের প্রতি আহ্বান জানান।