শাপলা চত্বরে শহিদদের রক্ত ইসলামের শত্রুদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে : হেফাজত মহাসচিব
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর মুহাদ্দিস আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামা ও নবীপ্রেমিক জনতার বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়া এবং আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে শাহাদতবরণ নাস্তিক-মুরতাদসহ ইসলামের শত্রুদের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।
হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে এবং ৬ মে কাঁচপুর ব্রিজ ও মালিবাগসহ সারাদেশে সরকার ও খোদাদ্রোহী শক্তির ভাড়াটে বাহিনী ও নাস্তিক-মুরতাদদের পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দলগুলোর সন্ত্রাসীদের হাতে শাহাদাতবরণকারী ভাইদের রুহের মাগফিরাত তথা মহান আল্লাহর দরবারে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মর্যাদাপ্রাপ্তির জন্য আজ সারাদেশে মসজিদ-মাদরাসায় দোয়ার আয়োজন করা প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব। আগামীকাল বুধবার হাটহাজারী কলেজ মাঠে (পার্বতী উচ্চবিদ্যালয় ময়দান) শানে রেসালত সম্মেলন সফল করে হেফাজতে ইসলামের চলমান ঈমানী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনি সর্বস্তরের নবীপ্রেমিক মুসলমানদের উদাত্ত আহ্বান জানান। হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলার উদ্যোগে শানে রেসালত সম্মেলনের প্রস্তুতিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ বাবুনগরী এ আহ্বান জানান। উক্ত সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এবং সভাপতিত্ব করবেন সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আহমদ দীদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা সালাহুদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মুঈনুদ্দিন রূহী, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা কাতেব ইলিয়াস উসমানী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর ইদরিস, হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়জী প্রমুখ।
সভায় আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, নাস্তিক-মুরতাদদের যারা দুধ-কলা দিয়ে পুষেছে, দিনের পর দিন নজীরবিহীন নিরাপত্তা দিয়ে শাহবাগ চত্বরে নর্তন-কুর্দন করিয়েছে, একজন স্বঘোষিত নাস্তিক ও নবীদ্রোহীকে জাতীয় সংসদে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ’ আখ্যা দিয়ে পুরো জাতিকে কলঙ্কিত করেছে, নিরীহ-নিরস্ত্র ও শান্তিপ্রিয় আলেম-ওলামার ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়েছে, বায়তুল মুকাররমে কুরআন পুড়িয়ে এর দায়ভার আলিমদের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করেছে; এদেশের মানুষ তাদেরকে কখনও রেহাই দেবে না। তারা আল্লাহর কঠিন শাস্তি ও আযাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না। হেফাজত আমির আল্লামা আহমদ শফী দেশের আলেম-ওলামা ও লক্ষ-কোটি নবীপ্রেমিক তরুণদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনগণ অপরিসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তবুও সরকারের বোধোদয় হয়নি, তারা নাস্তিক-মুরতাদ ও সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী ইসলামবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা এবং ধর্মদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন পাস করার দাবিতে কর্ণপাত করেনি। যতদিন উক্ত আইন পাসসহ হেফাজতে ইসলামের ঐতিহাসিক ১৩ দফা বাস্তবায়ন না হবে ততদিন এ ঈমানী আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।