নির্বাচনে বড় প্রভাব রাখবে এশীয়রা

ব্রিটেনের সংসদীয় নির্বাচনে স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিকে (এসএনপি) ধরা হচ্ছে কিংমেকার হিসেবে। কিন্তু আগামীকালের নির্বাচনে যে আরেকটি বিষয় ‘কিংমেকারে’র দায়িত্ব পালন করবে সেদিকে খুব একটা নজর দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয় না। নজর দেওয়া হলে অন্তত আলোচনায় উঠে আসত বিষয়টি।
এসএনপিকে কিংমেকার বলা হচ্ছে যে হিসেবে, সেটা হলো দুই প্রধান দলের মধ্যে যে দলটি এসএনপির মন জয় করতে পারবে, তারাই সরকার গঠনে তাদের সহায়তা পাবে। কিন্তু সরকার গঠনের জন্য যে পরিমাণ আসন পেলে এসএনপির দ্বারস্থ হওয়া যাবে, সে আসন পাওয়ার ব্যাপারে এসএনপির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে ভারতীয় ভোট। যে দল ভারতীয় অভিবাসীদের কাছে বেশি আসতে পারবে, ভোটের প্রাথমিক রাজনীতিতে তারাই নিঃসন্দেহে বাজিমাত করবে। আর সে বাজিমাত করার ব্যাপারটা মাথায় আছে বিধায় সব দলই ঝুঁকে পড়েছে ভারতীয় ভোটের আশায়।
দুই প্রধান নেতা ডেভিড ক্যামেরন এবং এড মিলিব্যান্ড নানাভাবে ভারতীয় অভিবাসীদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ভারতীয়দের মন্দিরে যাচ্ছেন। শুনছেন তাদের নানা সমস্যার কথা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও রয়েছে সে সম্পর্কিত নানা পরিকল্পনার কথা। সর্বাধিক ৪০ লাখ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন ব্রিটেনে। এই সংখ্যা ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের মোট ভোটের এক-দশমাংশ। তারা প্রায় সবাই জন্মসূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক। এদের মধ্যে অন্তত ৬ লাখ ১৫ হাজার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ব্রিটেনের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ইতিহাসে এটা হচ্ছে সবচেয়ে অনিশ্চিত এক নির্বাচন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতা লর্ড কারন বিলিমোরিয়া বলেন, ‘এ নির্বাচনে ১৫ লাখ ভারতীয় খুব বড় ভূমিকা পালন করবে। ভারতীয়রা সাধারণত লেবারদেরই ভোট দিয়ে থাকে। তবে এবারের নির্বাচনে তার ব্যত্যয় ঘটতে পারে। এবার কনজারভেটিভরাও ভাগ বসাতে পারে লেবারদের ভারতীয় ভোট বাক্সে।’
বিলিমোরিয়ার মতে, এর কারণ হলো কনজারভেটিভ নেতা ডেভিড ক্যামেরন তার নির্বাচনী ইশতেহারে ভারতীয়দের জন্য বেশ কিছু অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয় রেখেছেন, যা ভারতীয়দেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ ছাড়া তিনি ভারত সফর করেছেন, ভারতীয়দের প্রশংসা করেছেন এবং ভারতীয়দের স্বাধীনতার অগ্রদূত মহাত্মা গান্ধীর একটি ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন পার্লামেন্ট স্কয়ারে। বিলিমোরিয়া বলেন, ‘ভারতীয় যেভাবে ব্রিটেনে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে তা লক্ষণীয়। আমার বিশ্বাস, নিজের জীবনকালেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে হয়তো একজন ভারতীয়কে দেখতে পাব।’
এর কারণ হিসেবে তিনি ব্রিটেনের রাজনীতিতে ভারতীয়দের প্রভাব জোরেশোরে বাড়ার কথা বলেন। ১৯৮৭ সালে ব্রিটেনের উচ্চ এবং নিম্নকক্ষে ভারতীয় সদস্যের সংখ্যা ছিল মাত্র দু’জন। আর এখন সেখানে ২৫ জন। ২০১০ সালের নির্বাচনে অশ্বেতাঙ্গ এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মোট ভোটারের ৬৮ শতাংশ ছিল লেবার সমর্থক। কনজারভেটিভ ও ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছিল যথাক্রমে ১৬ ও ১৪ শতাংশ। কিন্তু ২০১৪ সালে দেখা গেছে লেবারদের জনসমর্থন কমে এই গোষ্ঠীর মধ্যে নেমে এসেছে ১৮ শতাংশের মধ্যে। তবে লেবার নেতা ক্রেগ ভাজ মনে করেন, নির্বাচনে তিনি এবং তার দল অধিবাসীদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পাবেন।
তিনি বলেন, ৯৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে এশীয় ভোট হবে ভোটের ফলাফল নির্ধারক আর ৪৫ আসনের মধ্যে কেবল ভারতীয়রাই হবে সবচেয়ে বড় উইনিং ফ্যাক্টর।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button