ঝুলন্ত পার্লামেন্ট ঠেকাতে মরিয়া কনজারভেটিভ
কনজারভেটিভ নেতারা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট ঠেকাতে যতটা না লেবার পার্টির বিরুদ্ধে প্রচার করছেন, তার চেয়ে বেশি প্রচার করছেন নাইজেল ফারাগের ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির বিরুদ্ধে।
কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা ডানকান স্মিথ মঙ্গলবার বলেন, ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির জন্য ভোট দেয়ার অর্থ হবে ব্রিটেনের জন্য আত্মহত্যার চিরকুট লেখার সমতুল্য। ডানকান স্মিথের কথার সঙ্গে নিজেও একমত জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ নেতা ডেভিড ক্যামেরন তার মঙ্গলবারের প্রচারণার শুরুতে দেয়া টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ভোটারদের বলেন, ‘যদি আপনারা অভিবাসনের ওপর পরিমিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত থাকতে চান, তাহলে আমাকে ভোট দিন।’ প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির সরকার গঠনের সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি শুধু বলেন, ‘তারা এমন একটি দলের (এসএনপি) সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাইছে, যারা দেশের একটি অংশ আলাদা করে ফেলতে চান।’ ভোটের বিষয়ে আগাম অনুমান না করে বরং বর্তমানে হাতে থাকা সর্বশেষ ৩৬ ঘণ্টা প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের মন জয়ের দিকেই তারা মনোযোগ দিতে চান বলে জানিয়েছেন ক্যামেরন।
কনজারভেটিভদের প্রচারের দিনে বসে ছিলেন না অন্য দলগুলোর নেতারাও। লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড মঙ্গলবারের প্রচারে নেমে স্থানীয় স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভোটারদের কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। তবে তিনি ভোটারদের পরমাণু অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচিত হলে এ বিষয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নিক ক্লেগ ইংল্যান্ডের স্থলসীমার একদম শেষ প্রান্ত থেকে তার প্রচারাভিযান শুরু করেন। ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাগও প্রচারণা চালান এবং একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে কনজারভেটিভ নেতা স্মিথের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন সতর্ক করে বলেছেন, ব্রিটেনের পরিস্থিতি আরো বেশি অস্থিতিশীল এবং ঝুলন্ত একটি পার্লামেন্ট হতে যাচ্ছে। এ অবস্থা ঠেকাতে কনজারভেটিভদের ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কনজারভেটিভ নেতা ও ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন মঙ্গলবার দেশটির ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় লিখেছেন, লেবার পার্টির সরকার ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। লেবার সরকারের অধীনে দেশের অর্থনৈতিক এই বিশাল সক্ষমতা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই উবে যাবে বলে ব্রিটেনের ভোটারদের সতর্ক করেছেন তিনি। এর আগে সোমবার রাতে ব্রিটেনে আরো অধিক ঝুলন্ত এবং অস্থিতিশীল পার্লামেন্ট হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দেন, পার্লামেন্ট অস্থিতিশীল হলে তা দেশের জন্য মোটেই মঙ্গলজনক হবে না। এর ফল হাতেনাতেই ভোগ করতে হবে। আর এই পরিস্থিতি এড়াতে কনজারভেটিভদের ভোট দেয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন ২০১০ সাল থেকে ব্রিটেনের চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার (অর্থমন্ত্রী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেতা।
মঙ্গলবার সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, ৩৪ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভদের প্রতি। আর প্রধান বিরোধী লেবার পার্টির সমর্থনও সমান ৩৪ শতাংশ। এর পাশাপাশি নিক ক্লেগের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ১০ শতাংশ, নাইজেল ফারাগের ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি ১৩ শতাংশ এবং গ্রিন পার্টি ৫ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পাবেন।