যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন নারী ভোটাররা
ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার ক্ষেত্রে সাধারণ ভোটের বাইরে এবার আলাদা করে নারী-ভোটের ওপর গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে। এবার ব্রিটেনের মোট ভোটারের ৫২ শতাংশই নারী। তাই নারী হিসেবে নেতা নির্বাচন করার সময় কিছু আলাদা বিষয় মাথায় রাখতেই পারেন তিনি_ এমন সম্ভাবনা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না।
নারীর ওপর সহিংসতা
এক জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটেনের তিন-চতুর্থাংশ নারীই সংসারজীবনে কোনো না কোনোভাবে সহিংসতার শিকার। নারীঘনিষ্ঠ বিষয় হিসেবে নির্বাচনে এটি ভূমিকা পালন করতে পারত। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ব্রিটিশ রাজনীতিকদের কিন্তু এই যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ব্যাপারে খুব একটা উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় না। বরং এ বিষয়ে এক ধরনের নীরবতাই পালন করেন তারা।
যৌন শিক্ষা ও পর্নোগ্রাফি
এবার বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় যৌনশিক্ষার বিষয়টি উঠে আসতে দেখা গেছে। ব্রিটেনের প্রভাবশালী নারীবাদী সংগঠন এভরিডে সেক্সিজম প্রজেক্টের লাউরা বেটস বলেন, ‘আমি অবশ্যই পরিষ্কারভাবে যৌন সম্পর্ক, যৌন শিক্ষা ও যৌনতার মতো ব্যাপারে প্রার্থীদের স্বচ্ছ নীতি এবং সেই সঙ্গে অনলাইন পর্নোগ্রাফির ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানতে চাই।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এ বিষয়গুলোতে রয়েছে মতপার্থক্য। লেবার পার্টি এবং লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টি চায়, বাধ্যতামূলক যৌন শিক্ষা। আর ক্ষমতাশীন কনজারভেটিভ এর বিরোধী।
পরিবার ও শিশু নিয়ে পদক্ষেপ
যদিও ব্রিটেনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে নিজের পায়ে জোর পাচ্ছে, তবুও দেশটির মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে এখনো শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ একটি বড় ইস্যু। ধরা হয়, গত পাঁচ বছরে শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিনগুণ। লেবার পার্টি এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বলছে, তারা সরকার গঠন করলে পরিবারের হাতে আরো বেশি অর্থ দেবে। কিন্তু রক্ষণশীল টোরিরা তাদের অবস্থান পরিষ্কারই করেনি।
নারী প্রতিনিধিত্ব
পার্লামেন্টে নারী প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে লেবার পার্টি এবার অনেক এগিয়ে। কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির বিরুদ্ধে এখনো লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ কাটেনি। প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজন মাত্র মহিলা এমপির যে নীতি, তা আজকের নির্বাচনে হয়তো আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। কয়েকটি জরিপ আভাস দিয়েছে, এ বছর ১৯২ জন মহিলা এমপি, অর্থাৎ আজকের পরে হয়তো নারী এমপির সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে ৩০ শতাংশ হয়ে যেতে পারে। কেননা, উন্নত বিশ্বের মধ্যে ব্রিটেন হচ্ছে নারী প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ৩৬তম স্থানে।
সমান বেতন
ব্রিটেনে নারীরা এখন পর্যন্ত পুরুষের তুলনায় প্রতি ঘণ্টায় ২.৫৩ পাউন্ড কম বেতন পেয়ে থাকেন। দেরিতে হলেও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি চাপের মধ্যে আছে এই লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে।