স্কটল্যান্ডের ৫৯টি আসনের মধ্যে ৫৬টিতে জয়ী এসএনপি
ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই স্কটল্যান্ডের স্বাধীতার প্রসঙ্গটি আবার সামনে চলে এসেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে গণভোটে সামান্য ব্যবধানে স্কটিশ স্বাধীনতার দাবিটি নাকচ হয়ে গেলেও বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) ভূমিধস জয়ের পর ভবিষ্যত ব্রিটিশ রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আবার এ ইস্যুটি চলে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে স্কটল্যান্ডের ৫৯টি আসনের মধ্যে ৫৬টিতে জয় পাচ্ছে এসএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ ও বিরোধী লেবার পার্টি জিতেছে মাত্র একটি করে আসনে। অথচ ২০১০ সালের নির্বাচনে মাত্র ছয়টি আসন পেয়েছিল এসএনপি।
এসএনপির পক্ষে এবার জনজোয়ার এতোটাই তীব্র ছিল যে যুক্তরাজ্য লেবার পার্টির প্রধান প্রচারণাকারী ডগলাস আলেক্সান্ডার এসএনপির ২০ বছরের এক তরুণী মেরি ব্ল্যাকের কাছে পরাজিত হয়েছেন।
অন্যদিকে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত কার্ককেলডিও দখল করে নিয়েছে এসএনপি।
এমন অভাবিত জয়ের পর এসএনপি আবার স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভূমিধস জয়ের পর দলটির সাবেক প্রধান অ্যালেক্স স্যালমন্ড বলেছেন, ‘সারাদেশে স্কটিশ সিংহরা আজ সকালে আবার গর্জন দিয়ে উঠেছে।’
‘স্কটল্যান্ডকে এক সুরে কথা বলতে বলা হয়েছে। এই সুর হবে আগামী ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্টে স্কটল্যান্ডের পক্ষে স্পষ্ট আওয়াজ তোলা,’ যোগ করেন স্যালমন্ড।
তবে দলটির জন্য খারাপ সংবাদ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে।
ফলে ‘কিং মেকার’ হওয়ার যে স্বপ্ন এসএনপির ছিল তা ভেস্তে গেছে। অন্যদিকে লেবার পার্টির সাথে একজোট হয়ে ক্যামেরনকে বিতাড়িত করার ইচ্ছাও আপাতত পূরণ হচ্ছে না।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসএনপির এই জয়ের ফলে স্কটল্যান্ডকে ধরে রাখতে হলে ব্রিটেনের সাংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।
দলের জয়ের পর এসএনপির নেতা নিকোলা স্টার্জন গ্লাসগোতে বলেছেন, ‘আজ রাতে স্কটিশ জনগণ এসএনপির ওপর তাদের আস্থা রেখেছেন এজন্য যে স্কটরল্যান্ডের কণ্ঠ শুনতে হবে এবং প্রগতিশীল রাজনীতির পক্ষে দাঁড়াতে হবে। আমরা সেটাই করতে চাই।’
তবে তিনি বলেন যে ‘এই নির্বাচন স্বাধীনতার দাবিতে ছিল ন। ফলে স্কটল্যান্ডের জনগণের কাছে আমি এই ওয়াদা দিচ্ছি যে এই ভোটকে আমি স্বাধীনতার পক্ষে জনগণের অনুমোদন হিসেবে দেখব না।’
তবে নিকোলাস যাই বলুন না কেন, স্কটল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী দলের এই বিজয়ে স্বাধীনতামারী যে আবার আশায় বুক বাঁধবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।