গির্জা থেকে জন্ম নিল ভেনিসে প্রথম মসজিদ
ইতালির ঐতিহাসিক ভেনিস নগরীতে স্থাপিত হলো সেখানকার প্রথম মসজিদ। একটি খ্রিস্টান চার্চকে সংস্কার করে স্থাপিত মসজিদটি আজ শনিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। আগামী সাত মাস এটি পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। শান্ত মারিয়া দেলা মিজেরিকডিয়া নামের চার্চটি প্রায় ৪০ বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়। সম্প্রতি কাতার সরকারের অর্থায়নে আধুনিক শিল্পকলা নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা প্রদর্শনী ‘ভেনিস বিনালে’র অংশ হিসেবে এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়। সুইডেনের শিল্পী ক্রিস্টোফার বুশেলের ডিজাইন অনুযায়ী প্রদর্শনীর প্রবেশে পথে মসজিদটি স্থাপন করে মূলত ইসলামের প্রতি কিছু মানুষের মনোভাবকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। তারা দেখতে চান এই উদ্যোগের বিপক্ষে কেমন প্রতিক্রিয়া হয়। চার্চ সংস্কার করে মসজিদে রূপান্তরিত করা মসজিদটি ভেনিসের প্রথম। স্থানীয় পুলিশ অবশ্য এটি নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন। তারা সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-৪ এর কাছে আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন, বিষয়টি (চার্চকে মসজিদ বানানো) স্পর্শকাতর হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতেও পারে। ভেনিস ইসলামিক কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আমীন আল আহদাব নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, প্রতি বছর এখানে লাখো মুসলিম পর্যটক আসেন। তারা বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করেন যে শহরে এসে ইসলামের ইতিহাসের বহু নিদর্শন দেখা যায় সেখানে কোনো মসজিদ নেই কেন? শত শত বছর ধরে ভেনিসের বিভিন্ন স্থাপনায় ইসলামের স্থাপত্যশৈলীর প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। সেখানে বহু মুসলিম থাকেন। কিন্তু সেখানে কোনো মসজিদ না থাকায় তাদেরকে স্টোর রুম বা দোকানে নামাজ আদায় করতে হয়। ভেনিস প্রায় এক হাজার বছর ধরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ছিল। তখন পার্শ্ববর্তী উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাথে এটির ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকলেও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব দিক নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক সময় বিবাদেও জড়িত হয়েছিল। এক পর্যায়ে ১৫৭১ সালে তুর্কি বাহিনীর সাথে গ্রিসের লেপান্ত নামক স্থানে ভয়াবহ যুদ্ধ হয় এবং এতে ভেনিস শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এর প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর পর চলতি বছরের শুরুর দিকে কাতার ভেনিসের রিয়ালটো ব্রিজের কাছে ইসলামী সংস্কৃতির ওপর একটি জাদুঘর তৈরির প্রস্তাব দেয়। বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরোধিতার মুখেই অবশেষে কাতারের প্রচেষ্টা সফল হলো।