কঠোর অভিবাসন নীতির পথে ব্রিটেন
ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডেভিড ক্যামেরন নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির জয়লাভের পর দেশটির অভিবাসন নীতিতে আরো ব্যাপক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসন নীতিতে কঠোরতার কারণেই ব্রিটিশরা এবারো আস্থা রেখেছে রক্ষণশীলদের ওপর। ভোটারদের মন ও ব্রিটিশদের জন্য চাকরির বাজার রক্ষায় ক্যামেরন সরকার অভিবাসীদের সঙ্গে কঠোর আচরণের পথে হাঁটবেন এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির প্রায় ৮০ লাখ অভিবাসীর মাঝে। আর অভিবাসন নীতিতে যেসব সংস্কার আনার কথা ক্যামেরন সরকার বলছে, তা বাস্তবায়ন করতে গেলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সংঘর্ষ প্রায় অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়বে।
কি ছিল ইশতেহারে? : গত মেয়াদ থেকেই ডেভিড ক্যামেরনের সরকার ক্রমশই অভিবাসীদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর হয়ে উঠছিল। আর এবারে নির্বাচনী ইশতেহারে ক্যামেরনের দল উল্লেখই করেছে যে, ‘আমরা গোটা অভিবাসন নীতিতেই বড় রকমের সংস্কার নিয়ে আসব। এবার ভিসার মেয়াদের অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করা ছাত্রদের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। এখন থেকে ব্রিটেনের প্রত্যেক বাড়িওয়ালাকে বিদেশি ভাড়াটেদের ব্যাপারে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। বাড়ি ভাড়ার চুক্তি করার সময় ভাড়াটেদের অভিবাসন পরিস্থিতি কি, তারা বৈধ নাকি অবৈধ অবস্থায় আছেন, তা তাদের খতিয়ে দেখতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের কোনো ক্ষেত্র যাতে আংশিক বা পুরোপুরি বিদেশি শ্রমিকনির্ভর না হয়ে পড়ে, সেজন্য কড়া নজর রাখা হবে।’ ডেভিড ক্যামেরনের রক্ষণশীল ইশতেহারে আরো বলা আছে, ‘কাউকে ব্রিটেনে আসতে হলে তাকে ভাষার ওপর কঠিন পরীক্ষায় পাস করতে হবে। কারণ সরকার অনুবাদের খরচ কমাতে চায়। আমাদের সমাজের সঙ্গে অভিবাসীরা ভালোভাবে মিশতে পারে সেজন্য যারা ফ্যামিলি ভিসায় ব্রিটেন আসতে চায় বা ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চায়, তারা ইংরেজিতে ভালো করলে তাদের উৎসাহিত করা হবে।’
এছাড়া জানা গেছে, আগে অনেকেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য দরখাস্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ব্রিটেনে কাটাতে পারতেন। এখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা পাওয়া রক্ষণশীল সরকার সে বিষয়ে আরো কড়াকড়ি অবস্থান নিতে যাচ্ছে। এমনকি যেসব ক্ষেত্রে ‘পারিবারিক জীবনের অধিকারের’ প্রশ্ন থাকবে, সেখানেও তারা নমনীয়তা দেখাবে না। এছাড়া কোনো বিদেশি অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ধরনের সেবার ওপর অভিবাসীরা যাতে চাপ সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও উল্লেখ আছে।