রত্নগর্ভা মায়ের হাতে অ্যাওয়ার্ড

Azadমা দিবসে মায়ের কথা মনে করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন দুই মন্ত্রী। স্মৃতিকাতর হয়ে বলেন নানা কথা। একজন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অন্যজন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।  রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘আজাদ প্রোডাক্টস অ্যাওয়ার্ড-২০১৪: রত্নগর্ভা মা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ দুই মন্ত্রীর আবেগে পুরো অনুষ্ঠানস্থলই হয়ে ওঠে আবেগময়।
পরিকল্পনামন্ত্রী পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি টেনে বলেন, রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা। তিনি বলেন, প্রাক ইসলামী যুগে নারীর কোন অধিকার ছিল না। ইসলাম সে অধিকার ফেরত দিয়েছে। আগে কন্যাসন্তান জন্মানো পাপ ও অভিশাপ মনে করা হতো। সে অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছে ইসলাম। তিনি বলেন, রাতে মাকে কোন দিন আমাদের সামনে ভাত খেতে দেখিনি। সব ভাত আমাদের ৩ ভাইকে খাইয়ে দিতেন। মা কতদিন রাতে এভাবে বুভুক্ষু ছিলেন তার কোন হিসেব নেই। মায়ের প্রতি স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, বড় কষ্টের মধ্য দিয়ে মা আমাদের মানুষ করেছেন। প্রায় রাতে মা না খেয়ে থাকতেন কিন্তু আমাদের বুঝতে দিতেন না। শিশু যখন জন্ম নেয় তখন প্রতিটি মা তার কাছে স্কুলের মতো। মা যখন সন্তানের চরিত্র গঠন করেন তখন মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমান। তিনি আরও বলেন, ৭ম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ বার নাম কাটা গিয়েছিল। বেতন না দেয়ার কারণে পড়াশুনা বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু মায়ের ভালবাসায় এগিয়ে চলেছি। ৩ বছর হলো জননীকে হারিয়েছি।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ছোট বেলায় খুব দুষ্ট প্রকৃতির ছিলাম। সেই জন্য মা প্রায় মারধর করতেন। এই জন্য অনেক দিন বাড়ি ফিরতে দেরি করতাম। কিন্তু বাড়ি ফিরতে দেরি হলে মা পথ চেয়ে বসে থাকতেন। বাড়ি ফিরে মা বলে ডাক দিলে সব ভুলে যেতেন। মায়ের ঋণ কোন দিন শোধ করা যায় না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমি যখন মুক্তিযুদ্ধ করতে গিয়েছিলাম। সেই সময় মা আমার কথা চিন্তা করতে করতে কঙ্কালসার হয়ে গিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদের বড় মেয়ে তানজিনা আজাদ বলেন, ‘রত্নগর্ভা মায়েদের আবেদনের প্রথম যোগ্যতা সর্বনিম্ন তিন সন্তানের গ্রাজুয়েশন। আমরা ভাই-বোন তিনজন। ইতিমধ্যে একজন ছাড়া দুইজনের গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিজনের গ্রাজুয়েশন শেষ হলে আগামীবার আমরাও ‘রত্নগর্ভা মা’য়ে আবেদন করবো। তিনি বলেন, বাবার অবর্তমানে এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আমরাই এগিয়ে নেব। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম, শিক্ষাবিদ রফিক উদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিদ হামিদা আলী, আজাদ প্রোডাক্টসের প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার আবুল কালাম আজাদ, সংগীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ।
আজাদ প্রোডাক্টস অ্যাওয়ার্ড রত্নগর্ভা মা ২০১৪ সাধারণ ক্যাটাগরির ২৫ জন ও বিশেষ ক্যাটাগরিতে ১১ জন মিলে মোট ৩৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সে সঙ্গে এবারের ‘মাই ড্যাড ওয়ান্ডরফুল’ মনোনীত হয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আনিসুল হকের বাবা মো. শরীফুল হক। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার নিপুণ কারিগর যারা (সাধারণ ক্যাটাগরিতে ২৫ জন)- মিসেস আনিতা চৌধুরী, মিসেস নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, বেগম রাশিদা চৌধুরী, আলহাজ  আনোয়ারা খাতুন, মিসেস নুরুননাহার হীরা, অধ্যাপিকা গুলনাহার লুৎফেয়ারা, মিসেস জয়নব বেগম, মিসেস সায়েরা রহমান, অধ্যাপিকা নীলুফার বেগম, মিসেস সালেহা খাতুন, মোসাম্মৎ সাহেরা খাতুন ফাতেমা, মিসেস ছালেহা বেগম, মিসেস জোহরা খাতুন, আলহাজ বেগম আয়েশা খানম, মিসেস শামছুন নাহার, মিসেস লিলি বেগম, মিসেস গুড়ি চাকমা, মিসেস বিজলী বিশ্বাস, মিসেস স্বপ্না বড়ুয়া, মিসেস মেরি বার্নাডেট রয়, মিসেস আনোয়ারা ইসলাম, বেগম ফাতেমা রশিদ, অ্যাডভোকেট হাসনে আরা গিয়াস, মিসেস নুরের নেছা ভূঁইয়া ও বেগম মনোয়ারা গনি। এ ছাড়া স্বপ্নসুন্দর আগামী বিনির্মাণের নেপথ্যে স্থপতি যারা (বিশেষ ক্যাটাগরি ১১ জন)- মিসেস দিল আফরোজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অপর্ণা রানী বিশ্বাস, মিসেস রহিমা রহমান, মিসেস মাহমুদা সুলতানা, মিসেস মাহমুদা বেগম, মিসেস ফাতেমা বেগম,  মিসেস আমেনা বেগম, বেগম নূরমহল, মিসেস রহিমা বেগম, মিসেস আয়েশা বেগম ও মিসেস লুৎফুন্নেসা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button