অবর্ণনীয় দুর্দশায় ভাসমান রোহিঙ্গারা
থাইল্যান্ডের উপকুলে আন্দামান সাগরে নৌকায় ভাসতে থাকা মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গারা খাদ্য ও পানির অভাবে ভয়ঙ্কর দুর্দশার মধ্যে আছে যে, তাদের বেঁচে থাকার জন্য নিজেদের মূত্র পান করছে। অবৈধভাবে সমুদ্রপথে এদের থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়ায় পাচার করা হচ্ছিল। থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেয়ার ফলে এরা দুর্দশায় পড়েছে। বিবিসির সংবাদদাতা জনাথান হেড এদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে গিয়েছিলেন।
থাইল্যান্ড উপকুলের অদূরে আন্দামান সাগরে মাছ ধরার একটি ট্রলারে তিনি প্রায় সাড়ে তিনশ’ রোহিঙ্গাকে এক সপ্তাহ ধরে খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে নিজেদের মূত্র পান করে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে দেখেছেন। ইতোমধ্যে দশজন মারা গেছে। কয়েকদিন আগে নৌকার চালক এবং কর্মচারীরা ইঞ্জিন অকেজো করে পালিয়েছে।
সংবাদদাতা জনাথান হেড যখন একটি ইঞ্জিনের জলযানে করে ট্রলারটির কাছাকাছি যান, তখন ট্রলারটি থেকে খাবার এবং পানি চেয়ে লোকজন আকুতি করছিল। সংবাদদাতা বলছেন, তিনি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলেন লোকজন বোতলে ভরা নিজেদের মূত্র পান করছিল। জনাথান হেডের নিজের জন্য যে পানির বোতল ছিল তিনি সেগুলো ট্রলারটিতে ছুঁড়ে মারেন।
ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে নৌকাডুবি, ৭০০ অভিবাসী উদ্ধার: ইন্দোনেশিয়ায় আচেহ প্রদেশের উপকূলে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে গেছে। সেখান থেকে প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করে শুক্রবার লাঙ্গসা নামের একটি স্থানে আনা হয়েছে।
লাঙ্গসা নগরীর পুলিশ প্রধান সুনারিয়া বলেন, আমরা তাদের কাছে থেকে যে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি তাতে জানা গেছে যে, মালয়েশিয়ার নৌবাহিনী তাদেরকে ইন্দোনেশিয়ার জলসীমার দিকে তাড়িয়ে দেয়।
তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়ার জলসীমানায় পৌঁছানোর পর নৌকাটি ডুবে যায়। স্থানীয় জেলেরা তাদের দেখতে পেয়ে তাদেরকে তীরে নিয়ে আসে।
লাঙ্গসার একজন অভিবাসী কর্মকর্তা সামসুল বাহরি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ৭১২ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার পেনাং ও ল্যাকাও দ্বীপের উপকূল থেকে দুই অভিবাসীবহনকারী নৌকা ফিরিয়ে দিয়েছে দেশটির প্রহরী জাহাজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরো একটি রোহিঙ্গা অভিবাসীবাহনকারী নৌকা ইন্দোনেশিয়ার জলসীমার দিকে আসছে। তাদেরকে থাই জলসীমায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।