চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা
সেন্ট্রাল চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। চীনের জিয়ানে অবস্থিত সানচি নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় মুসলিম ছাত্রীকে গত এপ্রিল মাসে তাদের হিজাব খুলে ফেলতে বলা হয় এবং চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসলামী হিজাব নিষিদ্ধ করে নোটিশ জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, সানচি শহরে একটি বৃহৎ ইসলামী জনসংখ্যার লোক বাস করে থাকে।
চায়না ভিত্তিক ইংরেজি ভাষার দৈনিক গ্লোবাল টাইমসের একটি রিপোর্টে বলা হয়, গত মাসে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাফেটেরিয়ায় কুরআন পড়ার কারণে অন্য একজন ছাত্রের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ধর্মপ্রচারের অভিযোগ আনা হয়।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার চীনের একটি ওয়েবসাইটে লি শেনজি নামে বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের (মুসলিমদের) রীতিকে গ্রহণ করি কিন্তু ধর্মীয় কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত কোনো ছাত্র-ছাত্রীকে আমরা অনুমোদন দিই না।’
যদিও লি ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার আদেশের কথা অস্বীকার করেন। তবে, ছাত্রীদের একজন নামপ্রকাশ না করার শর্তে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্লোবাল টাইমসের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ দাবিকে প্রত্যাখান করেন।
ওই ছাত্রী বলেন, ‘হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এখানকার উইগুর, কাজাক এবং হুইসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আরোপ করা হয়েছে।’
যদিও প্রকাশ্যে ধর্মীয় পোশাকের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। শি জিনপিং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধর্মীয় পোশাকের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে।
জিয়ানে ঐতিহ্যগতভাবে এখানকার বহুজাতিক জনসংখ্যার উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে দেখা যায়। এখানে প্রায় ৫০ হাজার সংখ্যালঘু হুই মুসলিম রয়েছে। তাদের অনেকেই প্রাচীন চীনের এ শহরটির গ্রেট মসজিদের সংকীর্ণ রাস্তায় চারপাশে বসবাস করছে।
গত বছর জিনজিয়াংয়ের কিছু এলাকায় অনেকটা জোর করে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়।