বাঙালিকে হত্যার দায়ে মার্কিন মহিলার ২৪ বছরের জেল
নিউইয়র্কে বসবাসকারী এক প্রবাসী বাঙালিকে হত্যার দায়ে এক মার্কিন মহিলাকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির শীর্ষ আদালত।
২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বরের রাতে সাবওয়ে ট্রেন ধরার জন্য প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলেন ৪৬ বছরের সুনন্দ সেন। ট্রেন ঢোকার মুহূর্তে সুনন্দকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে লাইনে ফেলে দেন ৩৩ বছরের এরিকা মেনেনডেজ।
তাকে পুলিশ যখন গ্রেফতার করে, মহিলা বলেছিলেন যে, তিনি হিন্দু ও মুসলিমদের ঘৃণা করেন। বিশেষ করে, ৯/১১ হামলার পর তিনি নাকি বহুবার হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষকে পিটিয়েছেন বলেও স্বীকার করেন।
কুইন্স প্রদেশের সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি গ্রেগরি লাসাক গত মার্চে ওই মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। যদিও মহিলা আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে, তিনি মনে করতে পারছেন না, কেন তিনি সুনন্দকে ধাক্কা দিয়েছিলেন।
সে প্রসঙ্গে এদিন সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারপতি মেনেনডেজের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, আপনার কী মনে আছে গ্রেফতার হওয়ার পর আপনি কী বয়ান দিয়েছিলেন? মহিলা উত্তরে না জানালে, বিচারপতি মহিলার ভিন ধর্মে বিদ্বেষের বিষয়টি পুনরায় আওড়ান। তাতেও মহিলা জানান, তার মনে নেই।
বিচারপতি জানান, এটা অত্যন্ত বর্বরোচিত হত্যার নিদর্শন। আমি নিহতের শেষ কয়েক মুহূর্তের কথা ভেবে শিউরে উঠছি। এক অত্যন্ত ভয়ঙ্কর মৃত্যু। প্রবাসী ভারতীয় সুনন্দ কুইন্সে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতেন। সেখানে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তাঁর একটি নিজস্ব প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা ছিল।
জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত ৮টা নাগাদ সুনন্দকে হত্যার করার অভিসন্ধি নিয়েই তাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে অনুসরণ করতে করতে সাবওয়ে স্টেশনে পৌঁছেন মেনেনডেজ। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন সুনন্দ।
ট্রেন আসতেই তাকে আচমকা পেছন থেকে ধাক্কা মারেন ওই মহিলা। ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন বলেন, মেনেনডেজের ওই কাজ গোটা শহরকে আতঙ্কিত করেছিল। কারণ প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ সাবওয়ে ধরে স্কুল-কলেজ-অফিসে বের হয়। এ ঘটনা তাদের কাছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের সামিল।