সাগরবাসী সব রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার প্রস্তাব গাম্বিয়ার
পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশ গাম্বিয়া বলেছে যে, নিপীড়নের ফলে সাগরে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গা মুসলিমকে তারা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
গাম্বিয়া সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুসলিম হয়ে নিপীড়িত মুসলিমদের আশ্রয় দেয়াকে ‘পবিত্র দায়িত্ব’ বলে মন্তব্য করছে সরকার।
সরকার আবেদন জানিয়েছে, ভাসমান সব রোহিঙ্গাকে যেন তাদের উপকূলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তারা তাদেরকে আশ্রয় শিবিরে স্থান দেবেন।
‘গাম্বিয়া সরকার গভীর উদ্বেগের সাথে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অমানবিক অবস্থা লক্ষ্য করছে, বিশেষ করে যাদেরকে বলা হয় নৌকাবাসী লোক, যারা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রের উপকূলে বর্তমান ভাসমান রয়েছেন,’ বলা হয় গাম্বিয়া সরকারের বিবৃতিতে।
‘মানুষ হিসেবে, তারচেয়েও বড় কথা সতীর্থ মুসলিম হিসেবে, সতীর্থ লোকদের অবর্ণনীয় কষ্ট ও দুর্ভোগ লাঘব করা পবিত্র দায়িত্ব।’
রোহিঙ্গাদের জন্য ‘বাসযোগ্য শিবির’ তৈরিতে উন্নয়নশীল দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাঁবু, গৃহনির্মাণ সামগ্রী এবং চিকিৎসা সামগ্রীর আবেদন জানিয়েছে।
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড সাগরে ভাসা রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের তাদের উপকূলে থেকে তাড়িয়ে দেয়ার পর গাম্বিয়া সরকার এ ঘোষণা দিল। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে গত বুধবার ৭,০০০ সাগরবাসীকে আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। গাম্বিয়া নিজেও এ ধরনের সংকটে ভুগছে।
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাবার চেষ্টাকালে গত ১৮ মাসে প্রায় ৫,০০০ অভিবাসী মারা গেছেন। এর একটি অংশ গাম্বিয়ার নাগরিক।
গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান ও কুস্তিগীর ইয়াহিয়া জামে ১৯৯৪ সাল থেকে কঠোর হস্তে দেশটি শাসন করছেন। তার সরকারের বিরুদ্ধেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতনসহ মানবাধিকার লংঘনের বহু অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘের ২০১৩ সালের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুসারে গাম্বিয়ার এক তৃতীয়াংশ লোকের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলার বা ১০০ টাকা।