অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে
অস্ট্রেলিয়ায় নও মুসলিমের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর সিডনিতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২ জন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। এদের বেশিরভাগই নারী। এই শহরে বছরে শতাধিক লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। সম্প্রতি বৃটেনের প্রভাবশালী টেলিগ্রাফ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ান নিউ মুসলিম অ্যাসোসিয়শনের হিসেবে দেখা যায়, প্রতি বছর যে শতাধিক লোক সিডনিতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নারী। এদের ৬০ ভাগই স্বামী ও পার্টনারের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন।
ইসলাম ধর্মে দীক্ষিতদের একজন হলেন জুলিয়া মুখাল্লালাতি। পশ্চিম সিডনির বাসিনা এই নারী মাত্র ১৮ বছর বয়সে অর্থডক্স ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। এখন তার বয়স ২২ বছর। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তিনি লেবানিজ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক রায়েদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জুলিয়া জানান, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি। জুলিয়া বলেন, ‘আমার মা-বাবা আমাকে অর্থডক্স ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেন। কিন্তু তারা আমার প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি সব সময়ই ইসলামের প্রতি গভীর অনুরক্ত ছিলেন। তার বিশ্বাস, ইসলাম নারীদের নির্যাতিত হওয়ার পরিবর্তে স্তম্ভের ওপর দাঁড় করিয়েছে।’ জুলিয়া বলেন, ‘আমি (ইসলাম সম্পর্কে) পড়াশুনা করার পরপরই বুঝতে পারলাম যে আমারও এই ধর্মে শরিক হওয়া দরকার। আমি দেখলাম (ইসলাম) নারীকে একটি বিরল হীরা বা ডায়মন্ডের মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। পরিবারে সে সম্মানের পাত্রী।’
তিনি বলেন, ‘তিনি বিশ্বাস করেন যে ইসলাম প্রচারে তারও দায়িত্ব রয়েছে। তবে এজন্য বিদেশে গিয়ে লড়াই করার বিপক্ষে তিনি।’ ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে কিছু মুসলমান উগ্রপন্থি। কিন্তু আমি উদারপন্থায় বিশ্বাস করি’, যোগ করেন জুলিয়া।
‘আমি যে কাজটা করেছি তা হলো যারা ইসলাম গ্রহণ করেন তাদের সঠিক সূত্র সরবরাহ করা। ইন্টারেনেটে অনেক তথ্য আছে যেখান থেকে জানা যায় প্রকৃত ইসলাম কী শিক্ষা দেয়।’ ‘আপনাকে জানতে হবে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা কী, লোকজন কিভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করে সেটা নয়।’ জুলিয়া জানান, নিকাব পরা বাধ্যতামূলক বলে তিনি মনে করেন না। তবে তিনি হেডস্কার্ফ পরেন। তার ভাষায়, ‘আমি গর্বভরে স্কার্ফ পরি। স্কার্ফ পরলে আমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে।’
অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম উইমেন’স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সিলমা ইহরাম ১৯৭৬ সালে ইন্দোনেশিয়ায় বেড়াতে গিয়ে মাত্র ২৪ বছর বয়সে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি আফসোস প্রকাশ করে বলেন, ‘নবদিক্ষিত কিছু মুসলিম উগ্রপন্থি হয় বলে অন্যদেরকেও সন্দেহের চোখে দেখা হয়।