মিটছে না আইএস-নুসরা দ্বন্দ্ব
আইএস ও আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট নুসরা ফ্রন্টের মধ্যে শিগগিরই সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা নেই। নুসরা ফ্রন্টের প্রধান নেতা মোহাম্মদ আল-গোলানি আল-জাজিরা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। কয়েক দিন আগে কাতারভিত্তিক আল-জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকার দেন গোলানি। ওই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় কিস্তি গত বুধবার প্রচার করে টেলিভিশন চ্যানেলটি। সেখানে গোলানি বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাদের (আইএস) সঙ্গে কোনো সমঝোতায় আসার সম্ভাবনা নেই। নিকট ভবিষ্যতেও এটা সম্ভব নয়।’ আইএস প্রসঙ্গে গোলানি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করব, তারা আল্লাহর কাছে অনুশোচনা প্রকাশ করবে এবং হুঁশ ফিরে আসবে। যদি তা না হয়, তাহলে আমাদের উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ ছাড়া কোনো পথ নেই।’
সুনি্নভিত্তিক দল হলেও আইএস এবং আল-কায়েদা সমর্থিত নুসরা ফ্রন্টের মতাদর্শে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। আইএস মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে সমর্থন করলেও আল-কায়েদা এর পক্ষপাতী নয়। দলটি বরং পশ্চিমা সেনা ও তাদের অনুগত সরকারের পতনের লক্ষ্যে হামলা চালিয়ে থাকে।
এদিকে, গোলানি তার সাক্ষাৎকারে ইরানকে আঞ্চলিক শত্রু বলে অভিহিত করেছেন। গোলানি বলেন, শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান সিরিয়ার আসাদ সরকারকে সহায়তা করে যাচ্ছে। দেশটিতে ইরান সেনা কর্মকর্তাদের পাঠানোর পাশাপাশি বিদ্রোহীদেরও সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নুসরা নেতা জানান, আসাদ সরকারবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়া দলগুলোকে দমন করতে সরকারপন্থী বাহিনীগুলোকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইরান। ইরানি সহায়তাপুষ্ট বাহিনীর বিরুদ্ধেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলে ইরানের অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করব।’ আমেরিকার সমালোচনা করে গোলানি বলেন, ‘আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। তারা বলে, ইরান ইরাককে নিয়ন্ত্রণ করছে। আসলে সত্যিটা হলো, আমেরিকা ইরাক দখল করে তা ইরানের হাতে তুলে দিয়েছে।’
উল্লেখ্য, এর আগের দফার সাক্ষাৎকারে নুসরা নেতা গোলানি বলেছিলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো তাদের টার্গেট নয়। তারা শুধু আসাদ সরকারের পতন ঘটানোর জন্যই কাজ করছে। আল-কায়েদার কোনো অঙ্গ সংগঠন হয়েও নুসরা ফ্রন্ট পশ্চিমাদের প্রতি বিষোদ্গার না করায় অবাক হয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ায় আসাদবিরোধী লড়াইয়ে আমেরিকাসহ পশ্চিমের সুনজরে আসতে চায় নুসরা। আর তাই তারা নিজেদের শুধু তীব্র আসাদবিরোধী এবং একই সঙ্গে আইএসবিরোধী বলেও প্রচার করতে চাইছে।