জাতীয় পাখির মর্যাদা পাচ্ছে কমলা বুকের দোয়েল
ব্রিটেনে জাতীয় পাখি নির্বাচনে ভোট
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয় পাখি রয়েছে। বাংলাদেশ ও সুইডেনে দোয়েল, জাপানে গ্রিন ফিসেন্ট, ফ্রান্সে ফরাসী মোরগ এবং ভারতে ময়ূর জাতীয় পাখির স্থান দখল করে রয়েছে। কিন্তু আপনারা শুনে অবাক হয়ে যাবেন যে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দেশ যুক্তরাজ্যে কোনো জাতীয় পাখি নেই। এই লজ্জা ঘুচাতেই সম্প্রতি তৎপর হয়েছেন দেশটির বেশ কিছু সচেতন মানুষ। এছাড়া টনক নড়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষেরও।
এ সম্পর্কে সেখানকার স্প্রিংওয়াচ এবং কান্ট্রিফাইলের উপস্থাপক ডেভিড লিন্ডো (৫১) বলেন, ‘এটি খুবই লজ্জাজনক একটি ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৮২ সাল থেকে পালকহীন ঈগল পাখি জাতীয় স্থান দখল করে আছে। অথচ যুক্তরাজ্যের কোন জাতীয় পাখি নেই।’
আর এ জন্যই সেখানে জাতীয় পাখি নির্বাচনে ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। দেশটিতে এটিই ছিল প্রকৃতি সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় ভোট আয়োজন। ওই ভোটে দেশটির ২ লাখ ২৪ হাজার ৪শ ৩৮ জন অংশ নিয়েছিল। একটি বিশেষ ওয়েব সাইটে এবং দেশটির বিভিন্ন স্কুলে পোষ্টাল ভোট এবং ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল। ওই ভোটে বিজয়ী হয়েছে রবিন (কমলা বুকের দোয়েল পাখি)। সেখানে শিশুদের জন্যও আলাদা ভোটের ব্যবস্থা ছিলো। শিশু ভোটেও রবিনই প্রথম হয়েছে। এতে অবাক উপস্থাপক লিন্ডো। তিনি বলেন, এ পাখি বহু আগে থেকেই জনপ্রিয় ছিল। বড়দিনের কার্ডে এবং আরো অনেক কিছুতেই রবিনের ছবির ব্যবহার হয়ে আসছে সেই কবে থেকেই।
এর আগে ১৯৬০ সালেও একবার রবিনকে জাতীয় পাখি নির্বাচন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছ না থাকায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। তবে এবার আর কোনো ফাঁক ফোকর রাখছেন না আয়োজকরা। ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লিন্ডো। জাতীয় পাখি নির্ধারনের এই ভোটে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছিল যথাক্রমে লক্ষ্মীপ্যাঁচা এবং কোকিল।
লিন্ডো প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শহরের জীবনে পশু পাখির প্রতি আমাদের ভালবাসা কমে যাচ্ছে। অথচ আমাদের চারপাশকে ঘিরে রেখে প্রকৃতি।’ হলুদ বুকের এই গানের পাখিটিকে জাতীয় পাখি হিসেবে নির্বাচন করায় প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক আরো নিবিড় হবে বলে মনে করেন তিনি। তাছাড়া বাগান, উদ্যান বা বনভূমিতে হরহামেশাই রবিনের দেখা মেলে। পথের ধারে হেঁটে গেলেই তাদের মিষ্টি গান শোনা যায়। আর এখনতো রবিনের গান শুনলে একটু বেশিই ভাল লাগবে যুক্তরাজ্যের মানুষের। কেননাে এটিই যে এখন তাদের জাতীয় পাখির মর্যাদা পেতে চলেছে।