বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আরো ব্রিটিশ সহায়তা চাই: প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যকে একটি মহান দেশ হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ব্রিটেনের আরো সহায়তা কামনা করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করছে। তবুও ব্রিটেনের কাছ থেকে আরো সহায়তা আমাদের প্রয়োজন। ব্রিটেন একটি মহান দেশ এবং দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদের সহায়তা দিয়ে আসছে। আমি আশা করছি, তারা বাংলাদেশের জনগণের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
সোমবার বিকেলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের (সিপিএ), যুক্তরাজ্য শাখার কার্যালয়ে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা করছিলেন। বাংলাদেশ সংক্রান্ত অলপার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ারম্যান কিথ ভাজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথমবারের মত নির্বাচিত আইন প্রণেতাদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, লেবার পার্টির এমপি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনী টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক এবং ব্রিটিশ হাউজ অব কমন্সের বেশ কিছু সদস্য অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
রুশনারা আলী, ড. রূপা হক, জিমি ফিটজপ্যাট্রিক, এ্যান মেইন, কেট ওসামার, ক্যাথরিন ওয়েস্ট, জোনাথান শ’, এ্যান্ডি স্লেটার, ব্যারোনেজ পলা উদ্দিনসহ প্রায় ৩০ জন এমপি এবং সিপিএ যুক্তরাজ্য শাখার প্রধান নির্বাহী এন্ড্রু টাগি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটেনকে বাংলাদেশের একটি প্রধান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ও ব্রিটেন দু’দেশের পারস্পরিক কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সকল আর্থ-সামাজিক খাতে ভাল অগ্রগতি লাভ করছে। আমরা নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেছি এবং বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যমে চীন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি।
বাংলাদেশে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, চিরদিনের জন্য এ অঞ্চল থেকে দারিদ্র্য নির্মূল করার একটি অভিন্ন লক্ষ্য আমাদের রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে আমরা সকল সমস্যা সমাধান করতে পারি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য নির্মূল করা এবং জনগণকে সকল মৌলিক সুবিধা প্রদান করা।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষের মত সুবিধাবঞ্চিত জনগণের জন্য সব সময় কাজ করছে।
প্রথমবার নির্বাচিত ব্রিটিশ এমপিদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা ব্যারোনেস ও পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, এটি একটি বিরাট কাজ এবং আমি জানি, আপনারা একটি উন্নত দেশের এবং আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশের। এ ক্ষেত্রে একটি বিরাট ব্যবধান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে। কিন্তু আপনারা ভাগ্যবান যে, আপনারা গণতন্ত্র ব্যবস্থা উপভোগ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাও ওয়েস্টমিনস্টার ধরনের গণতন্ত্র অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। এটি একটি কঠিন কাজ। তা সত্তে¦ও আমরা এ লক্ষ্যে ক্রমান্বয়ে অগ্রগতি লাভ করছি।
টিউলিপ সিদ্দিকের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিউলিপ যখন জন্ম নেন তখন তিনি লন্ডনেই ছিলেন। আমার এখনো মনে আছে যে, আমি প্রথমবার তাকে ‘টিউলিপ’ ফুলের মতোই দেখেছিলাম। এখন সে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। আমি তার জন্য গর্বিত এবং তার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।
প্রথমবার যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে নির্বাচিত হওয়ার পর তার অনুভূতি ব্যক্ত করে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন এলাকা থেকে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হওয়া একটি বিরাট সম্মানের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পৌঁছলে হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ স্বাগত জানান।