সিরাজুর রহমান ছিলেন পজেটিভ বাংলাদেশের ব্রান্ডিং অ্যাম্বাসেডর

SirajurRahmanলন্ডনে প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমানের শোকসভায় বিশিষ্টজনরা বলেছেন, সিরাজুর রহমান ছিলেন পজেটিভ বাংলাদেশের ব্রান্ডিং অ্যাম্বাসেডর। মুক্তিযুদ্ধ, বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফেরা, গণঅভ্যুত্থান সহ সব ইস্যুতে বাংলাদেশকে সঠিক পথে চলতে তিনি বিশ্বজুড়ে মতামত গড়ে তুলেছিলেন। জীবনের শেষ বেলার প্রতিটি লেখায় সিরাজুর রহমান মাতৃভুমির বিশ্বব্যাপী দুর্নাম ঘোচাতে গণতন্ত্রে ফেরার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গেছেন।
সোমবার বিকেল সাড়ে সাতটায় লন্ডন স্কুল অব কমার্স এন্ড আইটি’র অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, যুক্তরাজ্য শাখা সাংবাদিক সিরাজুর রহমানের শোক সভার আয়োজন করে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. কেএমএ মালিকের সভাপতিতে ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তারেক বিন আজিজের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় অংশ নেন সিরাজুর রহমানের সহকর্মী প্রখ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমান, বাসসের সাবেক এমডি গাজীউল হাসান খান, সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বকায়ক নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, টাওয়ার হ্যামলেটস-এর কাউন্সিলর অহিদ আহমেদ, কলামিস্ট ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ, সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরী, প্রফেসর ড. হাসনাত এমবিই, মেজর অব. আবু সিদ্দিক, সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান, শামসুল আলম লিটন, সাংবাদিক আবু সাঈদ প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তারিক বিন আজিজ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম তপন, গবেষক সোহাগ আহমেদ, যুক্তরাজ্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব সলিসিটর বিপ্লব পোদ্দার, আইনজীবী নেতা ব্যারিস্টার তমিজ উদ্দীন, একরামুল হক মজুমদার, ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি, ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, ব্যারিস্টার আবুল মনসুর মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার আশরাফুল আলম চৌধুরী, আলি আকবর কাদের, ড. শাহরিয়ার শোভন, অঞ্জনা আলম, মাওলানা শামীম, ইসরাত জাহান, খালেদ মিল্লাত প্রমুখ। দোয়া মোনাজাত করেন মাওলানা শামীম আহমেদ।
সিরাজুর রহমানের কর্মময় জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন তাঁর এক সময়ের সহকর্মী প্রখ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অগ্রসৈনিক ছিলেন সিরাজুর রহমান। তাঁর কন্ঠ মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ শুনতে বিশ্বব্যাপী প্রবাসীরা অপেক্ষা করতেন। তাঁর কাছ থেকে তথ্য পেয়েই প্রবাসীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজুড়ে প্রচারণা চালিয়ে ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রশ্নবিদ্ধ গণতন্ত্রিক সরকারের সমালোচনা করায় তারা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুর রহমানের মৃত্যুর পর নূন্যতম সন্মান দেখানোর প্রয়োজন বোধ করেনি।
শফিক রেহমান বলেন, বিবিসির বাংলা বিভাগের একজন সংবাদকর্মী হিসেবে সিরাজুর রহমান বিশ্বজুড়ে পজেটিভ বাংলাদেশের ব্রান্ডিং করেছেন। নতুন প্রজন্মকে তাকে ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সিরাজুর রহমানের দেশপ্রেমকে অনুসরন করতে পারলে বাংলাদেশ পরাধীন হবে না। গণতন্ত্রে ফিরতে বাধ্য হবে বর্তমান সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. কেএমএ মালিক বলেন, আমরা প্রবাসে থাকলেও মন পড়ে থাকে মাতৃভুমি বাংলাদেশে। তেমনি স্বাধীনতার আগে থেকেই বিবিসিতে কাজ করতেন সিরাজুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের অগ্রগতির সকল পর্বে পজেটিভ ভুমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রহীন। জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি প্রতিনিয়ত পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্রে ফেরার ওপর গুরুত্বারোধ করে গেছেন সিরাজুর রহমান।
প্রসঙ্গত, বিবিসি’র বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান সিরাজুর রহমান গত ১ জুন নর্থ লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান। নর্থ লন্ডনের একটি গোরস্থানে তাকে কবর দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button