এশিয়ার বিশ্বব্যাংকের যাত্রা শুরু
এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়ে গেল চীনে। সোমবার ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা এআইআইবি প্রতিষ্ঠার কাগজে সই করেছেন।
বলা হচ্ছে, এটি হবে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি ব্যাংক। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া এআইআইবির আর্টিকেলে স্বাক্ষর করেছে। তবে এ দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান এআইআইবি থেকে বাইরে রয়েছে। ব্যাংকটির প্রশাসনিক কাঠামোকে দুর্বল উল্লেখ করে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয়ের বাইরে গিয়ে এআইআইবির প্রতিষ্ঠাকে চীনের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সমর্থ হল চীন।
এআইআইবি প্রতিষ্ঠার আর্টিকেলে স্বাক্ষরকারী ৫০ দেশ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের মর্যাদা পাচ্ছে এবং একই সঙ্গে মূলধনী শেয়ারের মালিক হচ্ছে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে এআইআইবি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়। চীনের উদ্যোগে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে ২১টি দেশ নিয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হলেও সদস্যপদ নেয়ার সুযোগ রাখা হয় অন্য দেশের জন্য। সেই সুযোগ নিয়ে সদস্য পদ গ্রহণকারীসহ এখন এআইআইবির সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টিতে।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপলক্ষে সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা চীনের গ্রেট হলে সমবেত হন। আর্থিক সংস্থা হিসেবে যাত্রা করতে যাওয়া এআইআইবির আর্টিকেলে প্রথম সই করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর অন্য ৪৯টি সদস্য দেশ স্বাক্ষর করে। এ বছরের শেষে আরও সাতটি দেশ সদস্য পদ নিতে এআইআইবির আর্টিকেলে স্বাক্ষর করবে।
এশিয়ার অধিকাংশ দেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলো চীনের নেতৃত্বাধীন এ ব্যাংকে যোগ দিয়েছে। বিষয়টিকে কূটনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে চীনের সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের মতো বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চীনের প্রভাব নেই বললেই চলে। বিষয়টিকে মাথায় রেখে এআইআইবি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় চীন।
প্রাথমিকভাবে ৫০ বিলিয়ন ডলার মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করবে এআইআইবি। তবে মূলধন ১০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে। বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করা হবে এআইআইবির তহবিল।
চীনের অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, এআইআইবির মূলধনের ৩০.৩৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক থাকবে চীন। এর ফলে নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ২৬.০৬ শতাংশ মতামতের মালিক হবে দেশটি। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, চীনের পর ভারত হবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শেয়ার মালিক। দেশটি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হতে পারে। তৃতীয় অবস্থানে থাকবে রাশিয়া এবং জার্মানি থাকবে চতুর্থ অবস্থানে। চীনের অর্থমন্ত্রী লোউ জিওয়েই সোমবার বলেছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ এআইআইবির কার্যক্রম শুরু হবে।