হিজাব পড়ে উত্তম পোশাক এর পুরস্কার লাভ
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিফটন হাইস্কুলের ঘটনা। প্রতিবারের মতো এবারও সবচেয়ে সুন্দর পোশাক এর প্রতিযোগিতা হয়েছে স্কুলটিতে। অবশ্য প্রতিযোগিতা বললে ভুল হবে। মানে প্রতি বছর স্কুলের শিক্ষার্থীরা একজন ছাত্র ও ছাত্রীকে সবচেয়ে সুন্দর পোশাকের খেতাব দেয়া হয়।
প্রতিদিনকার পোশাকের ওপর ভিত্তি করে ভোটের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়। এবার সেই সুন্দর পোশাকের ২ টি খেতাবই জিতে নিয়েছেন দুই মুসলিম শিক্ষার্থী।
সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে সুন্দর পোশাকের নারী হয়েছেন স্কুলের সিনিয়র ছাত্রী আবরার শাহীন। সুন্দর পোশাকের পুরুষের খেতাবটি জিতেছেন আবরাহাম জিদান।
তবে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সুন্দর পোশাকের নারীকে নিয়েই। কারণ তার সুন্দর পোশাকটি হলো হিজাব। পরিপাটি হয়ে হিজাব পড়ে স্কুলে আসেন শাহীন।
এই খেতাব তার স্বপ্ন ছিল। এমনটাই জানালেন ফিলিস্তিনি বংশদ্ভুদ এই ব্রিটিশ নারী। বললেন, ‘সব সময় চিয়ারলিডাররা অথবা স্কুলের সবচেয়ে আকাক্ষিত মেয়েটিই এ খেতাবটি জিতে। তাই এই খেতাব জিতে খুব আশ্চর্য হয়েছি। হিজাব পড়েও আমি এই খেতাব জেতায় খুব খুশি হয়েছি। বলা যায়, আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’
তবে এর মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে, ধীরে ধীরে আমেরিকার হাইস্কুলগুলোতে হিজাব সম্পর্কে ধারণা পাল্টাচ্ছে। পাল্টাচ্ছে মানুষের মনোভাবও।
গ্রাজুয়েশন শেষ করা শাহীন নিউজার্সির রজারস থেকে ফিজিক্যাল থেরাপির ওপর পড়াশোনা করার পরিকল্পনা করছেন।
তবে খেতাব জেতার পর শাহীনের নতুন লক্ষ্য, যুক্তরাষ্ট্রে হিজাব সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদল করা।
শাহীন জানান, এটা ভেবে খুব খুশি হচ্ছি যে, মার্কিনীদের দৃষ্টিভঙ্গী ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। ওরা আমাদের আলাদা ভাবছে না। এটা খুবই সম্মানের যে, হিজাব দেখে ওদের মনোভাব পাল্টাচ্ছে না। এটাকে ভালোভাবেই নিচ্ছে।
তিনি জানান, আমি একেক দিন একেক ভাবে নিজেকে সাজাই। কারণ প্রতিটি দিনই তো নতুন।
পড়াশোনার পাশাপাশি একটি পোশাক কোম্পানিতেও চাকরি করছেন শাহীন। সেখানে নতুন নতুন পোশাকের ওপর কাজ করছেন তিনি।
শাহীনের এই অনন্য স্টাইল ও ফ্যাশন সেন্সের প্রশংসা করেছেন তার শিক্ষকরা।
ক্লিফটন হাইস্কুলের সিনিয়র ক্লাস অ্যাডভাইসর লিন্ডসে সিনকু জানান, ‘শাহীন সব সময় খুব গোছানো। এবং সবচেয়ে ভালো লাগে এই বিষয়টি যে, ও এই পোশাকের খুব গর্ববোধ করে। ওর মাঝে কোনো জড়তা নেই।’
তিনি আরো বলেছেন, ৮’শ শিক্ষার্থীর মধ্যে সবচেয়ে ‘সুন্দর পোশাকের’ খেতাব জিতেছে সে, এটি চাট্টিখানি কথা নয়। শাহীন কত ভোট পেয়েছে তা জানা যায়নি।