বিক্ষোভে উত্তাল বায়তুল মোকাররম
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকা। শুক্রবার বাদ জুমা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দলগুলো।
জুমার নামাজের পর থেকে হেফাজতে ইসলাম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে মিছিল বের করে। এর আগে মিছিল পূর্ব সমাবেশে ঢাকা মহানগর হেফাজতের আমির মাওলানা নূর হোসেন কাশেমী বলেন, সরকার লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিয়ে ১৬ কোটির মানুষের মনে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ আগুন নেভাতে হলে তাকে জেলে নিতে হবে। তার একমাত্র স্থান জেলখানা।
তিনি মৃত্যুদন্ড আইন করে লতিফ সিদ্দিকীসহ সকল নাস্তিক মুর্তাদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে দাবি জানিয়ে বলেন, আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। হেফাজতের আমির পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
এদিকে জুমার নামাজের পর ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, সম্মিলিত ইসলামী দল ও খেলাফত মজলিশ পৃথক পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভকে ঘিরে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। সকাল থেকে মসজিদ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেট এবং পুরানা পল্টন এলাকায় পুলিশের অবস্থান করতে দেখা যায়। এ ছাড়াও দৈনিক বাংলার মোড় এলাকাতেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমাবার বিকালে লতিফ সিদ্দিকী মুক্তি পান। তিনি কারাবন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগে হাইকোর্ট থেকে সাবেক এই মন্ত্রী প্রথমে ৭ মামলা এবং পরে আরো ১০ মামলায় জামিন পান।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে করা ৭ মামলায় গত ২৬ মে সাবেক এই মন্ত্রীকে ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন একই সঙ্গে আদালত এসব মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন।
পরে ২৩ জুন একই অভিযোগে করা আরো ১০ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান লতিফ সিদ্দিকী।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য দল থেকে বহিষ্কৃত হন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও কটূক্তির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়। নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় প্রতিটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গত বছর ২৫ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।