জাতিসংঘে ইসরাইলবিরোধী ভোট দিতে ভারতের অস্বীকৃতি

জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো ইসরাইলবিরোধী ভোট দেওয়া থেকে ‘বিরত’ থাকলো উদীয়মান পরাশক্তি ভারত।
গত বছর গাজায় ইসরাইলের অভিযানের ওপর জাতিসংঘ তদন্ত কমিশনের তৈরি করা প্রতিবেদন শুক্রবার জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পক্ষ থেকে অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত হলে এ অবস্থান নেয় এশিয়ার এই ক্ষুদে পরাশক্তি।
তবে প্রতিবেদনটিতে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বেশ কিছু রাষ্ট্রসহ মোট ৪১টি দেশ এ প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য ভোট দেয়। তবে ভারতসহ পাঁচটি দেশ এ ব্যাপারে ‘বিরত’ থাকে।
এদিকে বিরত থাকা বাকি চারটি দেশ হলো— কেনিয়া, ইথিওপিয়া, প্যারাগুয়ে ও মেসিডোনিয়া। তদন্ত প্রতিবেদনটি অনুমোদনের বিপক্ষে ভোট দেয় কেবল ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতের এ ‘বিরত’ থাকার সিদ্ধান্তকে যখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ইসরাইলের জন্য অভূতপূর্ব অর্জন’ বলে উল্লেখ করছে, তখন নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘ফিলিস্তিনকে সহযোগিতা ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন নেই’।
ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে মোদির সরকারকে তাদের পশ্চিম-এশিয়া নীতির বিষয়ে জনগণকে বোঝাতে গলদঘর্ম হতে হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে সরকার নতুন কোনো পথ খুঁজছে না বলে বিজেপি জোট দাবি করলেও ২০১৪ সালে ইসরাইলের গাজা অভিযানের ওপর জাতিসংঘের তৈরি করা অপর এক প্রতিবেদনে অনুমোদন দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে তারা। তবে, এবার সেই সমালোচনার পথ বন্ধ করে দিল বিজেপির জোট সরকার।
তবে ভোট দেওয়া থেকে ‘বিরত’ থাকার যুক্তি দিয়ে ভারত বলছে, জাতিসংঘ তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে বলায় নয়াদিল্লি ভোটের ব্যাপারে নীরব থেকেছে। কারণ ভারত আইসিসিকে মানে না।
এদিকে সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে নয়াদিল্লির নীতির কোনো পরিবর্তন নেই দাবি করা হলেও তাদের নীতির পরিবর্তন দৃশ্যমান ইসরাইল ইস্যুতে। এর প্রমাণ শুক্রবার জাতিসংঘে কার্যত ইসরাইলবিরোধী ভোটে ‘বিরত’ থাকা।
আরও পোক্ত প্রমাণ আসছে চলতি বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে। এ সময়ে ইসরাইল সফরে যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৯২ সালে দু’দেশের মধ্যে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ সফরে যাবেন মোদি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button