‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পাবে, মুসলিমরা নয়’
নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে যখন আসামের রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত তখন গভর্নর পি বি আচার্য এ নিয়ে প্রকাশ্যে তার মতামত জানিয়ে দিলেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় নির্যাতন সহ্য করে তাড়া খেয়ে এ দেশে আসেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরা। তাই এদের উদ্বাস্তু বলে গণ্য করে নাগরিকত্ব দিতে আপত্তি থাকতে পারে না। তবে মুসলিমরা আসেন কাজের সন্ধানে। কাজ করে আবার ফিরেও যাওয়া উচিত তাদের। এরা অবৈধ প্রব্রজনকারী।’
তিনি বলেছেন, ‘কারা আশ্রয়প্রার্থী এবং কারা অনুপ্রবেশকারী তা নির্ণয় করা কোনো কঠিন কাজ নয়। হিন্দুরা তাড়া খেয়ে আসছেন। তারা উদ্বাস্তু। তাদের নাগরিকত্ব দেয়া যেতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশে তো আর মুসলিমদের ধর্মীয় বিদ্বেষের জ্বালা সহ্য করতে হয় না। হিন্দুদের মতো মারপিট করে ওই দেশ থেকে তাড়ানো হয় না মুসলিমদের। তারা ভারতে কাজ করতে আসেন। কাজটাজ করে এদের চলে যাওয়াই উচিত। কিন্তু যারা মার খেয়ে এদেশে আশ্রয় নেন তাদের নাগরিকত্ব দেয়া প্রতিটি সরকারের কর্তব্য।’
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি কার্যত বিজেপি ঘরানার ভাবাদর্শের প্রকাশ ঘটিয়ে এক ধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তৈরি করে ক্ষমতা দখল করা উচিত নয়। এতে যেমন গণতন্ত্র চোট খায় তেমনই দেশকে ধোঁকা দেয়াও হয়।’
এসব মন্তব্যের পাশাপাশি গভর্নরের দাবি, ‘ধর্মীয় নির্যাতনের জেরে ছিন্নমূল মানুষদের আশ্রয়ের দায়িত্ব শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা আসামকে নিতে হবে সেটাও ঠিক নয়। তাদের অন্য রাজ্যেও পুনর্বাসন দেয়া যেতে পারে।’ তার মতে, ছিন্নমুলদের আসামে আশ্রয় দিলে রাজ্যের জনবিন্যাসগত কাঠামো পাল্টে যেতে পারে-এমন ধারণা অস্বাভাবিক নয়।
প্রসঙ্গত, আসামে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি বহুদিন ধরেই বলে আসছে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাংক বানিয়ে ক্ষমতা দখল করছে কংগ্রেস। গেরুয়া শিবির অবশ্য হিন্দুদের অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করে না। এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু মুসলিমরাই তাদের টার্গেট। কার্যত, বিজেপির সুরে সুর মিলিয়েই গভর্নর পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্য উদ্বাস্তু, নাগরিকত্ব ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করেছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।