খালিপেটেই যুদ্ধজয়
মুক্তি পেলেন ফিলিস্তিনি অনশনকারী আদনান
তার যুদ্ধ ছিল খালিপেটে। অর্থাৎ, অনশন করেছিলেন তিনি। যুদ্ধ শেষে জয়ও পেয়েছেন ফিলিস্তিনি নেতা খাদের আদনান। ইসরাইলের জেলে বিনা বিচারে বন্দি অবস্থায় টানা ৫৫ দিন অনশনের পর রোববার মুক্তি পেয়েছেন আদনান। গত বছর জুলাইয়ে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের আরাবেহ-এর নিজ বাড়ি থেকে আদনানকে গ্রেপ্তার করে ইসরাইলি পুলিশ। এরপর থেকে ইসরাইলের রামলা কারাগারে তাকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়। বিনা বিচারে কারাগারে আটক রাখার প্রতিবাদে চলতি বছর ৬ এপ্রিল থেকে অনশন শুরু করেন ইসলামিক জিহাদ পার্টির এই নেতা। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারাগারের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে আদনানের জীবন নিয়ে রেডক্রসসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইল সরকার। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে রোববার তাকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর পশ্চিম তীরের আরাবেহের নিজ বাড়িতে পেঁৗছলে উপস্থিত জনতা তাকে স্বাগত জানায়। মুক্ত আদনান তখন বলেন, ‘ইসরাইল থেকে বন্দিদের কেউ মুক্তি পেলে স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। আবার একইভাবে ইসরাইলের জেলে আটক বন্দিদের জন্য তাদের হৃদয় কেঁদে ওঠে।’
প্রসঙ্গত, ৩৭ বছর বয়সে ইতোমধ্যে বিনা বিচারে ইসরাইলি জেলে মোট ৬ বছর কাটিয়েছেন আদনান। ৬ সন্তানের জনক এই রুটি বিক্রেতা এ নিয়ে ১০ বার ইসরাইলি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন। কিন্তু কোনোবারই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। বিনা বিচারে কারাগারে কাটানো এই নেতা এর আগেও অনশন করেছিলেন। ২০১৩ সালে টানা ৬৬ দিন অনশন করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার অনশনকালে কোনো ধরনের ডাক্তারি পরীক্ষা বা ভিটামিন নিতে অস্বীকৃতি জানান আদনান। কারাগারে আটক থাকাকালে আদনানের সঙ্গে তার পরিবারের কাউকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে খাদের আদনান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ইসলামিক জিহাদ পার্টির এই নেতার বিরুদ্ধে সহিংসতার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ কারণেই অনশন থেকে তার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় ছিল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। এ ধরনের কিছু হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ারও সম্ভাবনা থেকে যেত।