ব্রিটেনে ঈদের দিনেও রেষ্টুরেন্ট কর্মীদের কাজ : ছুটির দাবীতে মানববন্ধন

Curryমুনজের আহমদ চৌধুরী: মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর। কিন্তু এই দিনটিতেও যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার বাঙ্গালী রেষ্টুরেন্ট কর্মীর একটি বড় অংশকেই যেতে হয় কাজে। প্রতি বছরই রেষ্টুরেন্ট কর্মীদের ঈদের ছুটি না পাওয়ার দাবী নিয়ে ঈদের মৌসুমে খবর প্রকাশিত হয় গনমাধ্যমে। রেষ্টুরেন্ট মালিকদের সংগঠনের নেতারা দেন ছুটির আশ্বাসও। কিন্তু তারপরও ছুটি পান না বেশিরভাগ রেষ্টুরেন্টকর্মীরাই। এদিকে ঈদের দিনটিতে রেষ্টুরেন্ট কর্মীদের ছুটির দাবিতে শুক্রবার ঈদের নামাজের পর ইষ্ট লন্ডন মসজিদের সামনে মানববন্ধন পালন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন ফ্রেন্ডস হেলপিং সোসাইটি। মানববন্ধনে অংশ নেন ক্বারী লাইফ পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, বাংলা পোষ্ট চেয়ারম্যান শেখ মফিজুর রহমান,কাউন্সিলার অহিদ আহমদ,মিজানুর রহমান রোমান প্রমুখ। সংগঠনের সভাপতি শাহ আলম ও সাধারন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জানান, সারামাস রোজা রেখে অনেকে ঈদের নামাজ পড়ারও সুযোগটুকুও পান না অনেকে। এই প্রবাসে ঈদের আনন্দ দুরে থাক,ঈদের নামাজ পড়ার তৃপ্তিটুকু থেকে বঞ্চিত অনেকে। এমন দু:খজনক বাস্তবতায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রেষ্টুরেন্টে কর্মরত প্রায় ৮০ হাজার রেষ্টুরেন্ট কর্মীর দীর্ঘদিনের দাবি ঈদের দিনটিতে ছুটি পাবার।
আহাদ মিয়া বনমাউথের একটি রেষ্টেুরেন্টে কুক হিসেবে কাজ করেন। গত ঈদের দিনে তিনি ছুটি চেয়েও ছুটি পাননি মালিকের কাছ থেকে। তিনি জানান,আমার রেষ্টুরেন্ট একটি গ্রামের মধ্যে। নিকটস্থ মসজিদও সেখান থেকে কয়েক মাইল দুরত্বে। সারাদিনে সেখানে মাত্র দুটি বাস চলাচল করে। রেষ্টুরেন্টের মালিক থাকেন পাশ্ববর্তী শহরে। তিনি গত ঈদের রাতে বলেছিলেন আমাকে নিয়ে ঈদের দিন নামাজ পড়তে যাবেন। কিন্তু ঈদের দিন সকালে তিনি আসতে পারেননি। আমারও আর ঈদের নামাজটুকুও পড়া হয়নি। সারামাস রোজা রেখে যদি ঈদের নামাজটুকু না পড়তে পারি তার চেয়ে বড় খারাপ লাগার বিষয়টি আর কী হতে পারে?অথচ বড়দিনে রেষ্টুরেন্ট বন্ধ থাকে। রেষ্টুরেন্টের হিন্দু কর্মী থাকলে তারাও দুর্গা পুজায় ছুটি পান।অথচ আমরা পাই না।
লুটনের কাছাকাছি একটি রেষ্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করেন মৌলভীবাজারের টেংরাবাজারের বাসিন্দা মহসীন আহমেদ। তিনি বলেন,সাড়ে পাঁচ বছর ধরে কাজ করছি রেষ্টুরেন্টে। কিন্তু এই সাড়ে পাচঁ বছরে কোন রেষ্টুরেন্টেই ঈদের দিনে সারাদিন ছুটি পাইনি । আগে বিষ্টলে একটি রেষ্টুরেন্টে কাজ করতাম।সেখানে ঈদের দিন লাঞ্চে ছুটি দেয়া হত।বিকেলবেলা আবার কাজে যেতে হত।
এদিকে ঈদের দিনে ছুটির ব্যাপারে বাংলাদেশী ক্যাটারারর্স এসোসিয়েশন (বিসিএ) এর সভাপতি পাশা খোন্দকার সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপ কালে বলেছিলেন,যুক্তরাজ্যে বিসিএর সদস্য প্রত্যেকটি রেষ্টুরেন্টে ঈদের দিনে লাঞ্চে ছুটি দেয়া হয়। ইতিমধ্যে সারে ও কেন্টের কিছুসংখ্যক রেষ্টুরেন্টগুলোতে ঈদের দিনে সারাদিন বন্ধ থাকে। ঈদের দিন লাঞ্চ টাইমে ছুটি দেয়া হয়না এমন রেষ্টুরেন্টের সংখ্যা একেবারেই নগন্য। আর বিসিএর নন মেম্বারদের ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে আমাদের সেভাবে করারও কিছু নেই। আর বিসিএর সদস্য নন এমন রেষ্টুরেন্ট মালিকদের প্রতিও আমরা ঈদের দিন কর্মীদের জন্য অন্তত লাঞ্চে ছুটি দেবার জন্য আহব্বান জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button