ভিডিও প্রকাশে বিব্রত ব্রিটিশ রাজপরিবার
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বহুল প্রচারিত পত্রিকা দ্য সানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের কিছু দুর্লভ তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। তথ্যচিত্র প্রকাশ পরবর্তীতে বাকিংহাম প্যালেস বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি এবং দ্য সান পত্রিকাটিকে মোটামুটি ব্যাপক হুমকি ধামকির উপর রাখা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যচিত্রে দেখা যায় এডওয়ার্ড অষ্টম সাত বছর বয়সী ভবিষ্যত রানী এবং তিন বছর বয়সী প্রিন্সেস মার্গারেটকে নাৎসী কায়দায় স্যালুট দেয়া শেখাচ্ছেন। বাকিংহাম প্যালেসের দাবি, দ্য সান রাজপরিবারের একান্ত তথ্যচিত্র প্রকাশ করে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে।
মাত্র সতেরো সেকেণ্ডের এই তথ্যচিত্র প্রকাশ পাবার পর গোটা ইংল্যান্ড জুরে সমালোচনার ঝড় বইছে। অবশ্য বাকিংহাম দাবি করছে যে, এই তথ্যচিত্রটি তাদের পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তির অংশ এবং এই তথ্যচিত্রকে এভাবে ব্যবহার করায় পরিবারটি গভীরভাবে ব্যথিত। কিন্তু রাজপরিবার যতই ব্যথিত হোক, এটাতো নিশ্চিত যে রাজপরিবারের অভ্যন্তরে এমন অনেক কিছুই আছে যা জনসমক্ষে আনতে চায় না এর সদস্যরা। এমনকি প্রিন্স ডায়ানার দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুকেও সন্দেহের তীর হিসেবে অনেকেই রাজপরিবারের দিকে ছুড়ে দেন।
বাকিংহাম প্রাসাদের মুখপাত্র জানান, ‘প্রায় আট দশক আগে ওই ভিডিওটি করা হয়েছিল এবং ওটা রানীর একান্ত পারিবারিক সংগ্রহশালার অংশ। এটাকে এভাবে ব্যবহার করা কোনো ভদ্রচিত কাজ নয়।’ তবে প্রাসাদের অপর এক সূত্র জানায়, ‘অধিকাংশ মানুষই এই ভিডিওটিকে একটি পরিবারের খেলাধূলারত দৃশ্য হিসেবেই দেখবে। এটাকে সংবাদ হিসেবে ব্যবহার করা খুবই গর্হিত কাজ। যখন ওই ভিডিওটি করা হয় তখন রানীর বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর এবং তিনি এর কিছুই বুঝতেন না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রানীর পরিবার কিভাবে লড়াই করেছে সেটা সবারই জানা।’
ওই ভিডিওটি এমন এক সময় ধারণ করা হয়েছিল যখন জার্মানিতে সবেমাত্র হিটলার ক্ষমতায় আরোহন করছেন। এই ভিডিওচিত্র ধারণ করার সাত বছর পর মূলত যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য অষ্টম এডওয়ার্ডের যে নাৎসী প্রীতি ছিল তা ইতিহাস সাক্ষ দেয়। তবে সবকিছুর বাইরে এটা পরিষ্কার যে, জার্মানি এবং হিটলারকে নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারে তৎকালীন সময়ে এতটাই কথাবার্তা হতো যে তাদের বাহ্যিক আচরণে পর্যন্ত তার প্রভাব পরেছিল। আর সেই প্রভাবটা যে ভেতরে ভেতরে কিছুটা ইতিবাচকও ছিল তার প্রমাণ এই তথ্যচিত্র।
জার্মানিতে হিটলারের উত্থানের ওই উত্তপ্ত সময়ে বেশ কিছু কায়দা কানুন বিশ্ববাসীর সামনে নতুন করে হাজির হয়েছিল। এরমধ্যে অন্যতম ছিল হিটলারকে স্যালুট দেয়ায় কায়দা এবং হিটারের ভাষণ দেয়ার সময়কার অঙ্গভঙ্গি। তৎকালীণ সময়ে হিটলারের আদর্শ অনুসরণ করে অনেক দেশেই গোপন অনেক সংগঠন তৈরি হয়েছিল, যারা হিটলারের কায়দায় স্যালুট ও অঙ্গভঙ্গি করতো। পাশাপাশি নিজ নিজ দেশে গোপনে নাৎসীদের অনুকরণে বিপ্লবও করতে চেয়েছিল। কিন্তু কোনো দেশেই তা সফল হয়নি।