ইরানের পরমাণু চুক্তি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস
ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যকার চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তি অনুমোদনের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তোলা খসড়া প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস করা হয়েছে। এ পদক্ষেপের মধ্যদিয়ে ইরান সমঝোতাকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দেয়া হলো এবং তেহরানের ওপর থেকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পথ পরিষ্কার হলো।
নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি নিউজিল্যান্ডের দূত জেরার্ড ভ্যান বোহেমেন জানান, সোমবার ওই চুক্তির ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি (পাঁচটি স্থায়ী এবং ১০টি অস্থায়ী) সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা ওই চুক্তিতে অনুমোদন দেন।
এর আগে, মঙ্গলবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ইরান এবং পি ৫ প্লাস ১ গ্রুপের (পি ৫= যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং প্লাস ১ = জার্মানী) মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পি ৫ দেশগুলো আবার নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তোলা প্রস্তাবের খসড়ায় বলা হয়েছে- বেধে দেয়া সময়ের মধ্যেই ভিয়েনায় সই হওয়া সমঝোতার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া, এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে এ প্রস্তাবে একটি বিতর্কিত অপশন রাখা হয়েছে; সেটি হচ্ছে ইরান যদি সমঝোতা বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করে তাহলে আবার তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসবে।
প্রস্তাবের এ অংশে বলা হয়েছে- ছয় জাতিগোষ্ঠীর যেকোনো একটি রাষ্ট্রও যদি অভিযোগ করে যে, ইরান সমঝোতা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে না তাহলে একটি যৌথ কমিশনে তা তোলা হবে এবং কমিশন সে অভিযোগ ১৫ দিনের মধ্যে খতিয়ে দেখবে।
ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা নিরাপত্তা পরিষদের এ প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছেন।
জাতিসংঘে এই প্রস্তাব পাসের ফলে নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশটির ওপর ২০০৬ সালে যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তা পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে নেওয়ার পথ পরিষ্কার হলো।
এছাড়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেহরানের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাও প্রত্যাহার করা হবে। বিনিময়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকারণ তথা পারমাণবিক অস্ত্র বানানো থেকে বিরত থাকবে ইরান।