স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের সংস্কৃতি চালু করব : জন বিগস
টাওয়ার হ্যামলেটসের নবনির্বাচিত নির্বাহী মেয়র জন বিগস কাউন্সিল পরিচালনায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ কমিয়ে আনার ব্যাপারে তার বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার কাজের বিবরনী দিয়ে নিয়মিতভাবে সাংবাদিকদের কাছে জবাবদিহি করার প্রতিশ্রু তিতে তিনি অটল রয়েছেন। এর মাধ্যমে বারার বাসিন্দারা টাউন হল পরিচালনায় তার কর্ম তৎপরতা সম্পর্কে জানতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
তিনি বলেন, বিরোধী দলসহ আমি সবার কাছে আমার কাজের জবাবদিহি করতে প্রস্তুত। এজন্য নির্বাচিত হওয়ার পর কাউন্সিলের স্ক্রুটিনি কমিটির প্রথম সভায় উপস্থিত হওয়ার কথাও তিনি জানান। জন বিগস ২০ জুলাই, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। মালবারী প্লেসে অবস্থিত মেয়র অফিসে এই জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। গত ১১ জুন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ছিলো তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে জন বিগস বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জন বিগস বলেন, জিএলএ মেম্বার হওয়ার কারনে আমি বেতন কম নিচ্ছি। এতে কাউন্সিলের অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমি অন্যান্য জিএলএ মেম্বারদের রীতি অনুসরন করছি। বর্তমানে লন্ডন মেয়র বরিস জনসনসহ ৩ জন জিএলএ মেম্বার এমপি। আর মাত্র ১০ মাসের জন্য উপ নির্বাচন আর্থিকভাবে ব্যয়বহুল।
দুটো পদে থাকার জন্য কাজে কোন বিঘ্ন হচ্ছে না জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অফিস করি। ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসাবে মেয়রের গাড়ী প্রত্যাহারের কথাও তিনি জানান। তিনি বলেন, আমি সবসময় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করবো। এতে করে আমি কাউন্সিলের অর্থ বাঁচাতে পারবো। একই কারনে তার অফিস সাইজ ছোট করা এবং কাউন্সিলের নিজস্ব পত্রিকা ইস্ট এন্ড লাইফ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনাও দেন তিনি। জন বিগস বলেন, জনগনের অর্থে আমি আমার নিজের প্রচারনা করতে চাইনা। আমি চাই আপনারা আমার ভালো কাজগুলো তুলে ধরুন, একই সাথে আপনাদের কাছ থেকে গঠনমূলক সমালোচনাও আশাকরি।
সংবাদ সম্মেলনে, জন বিগস তার ৫টি প্রায়োরিটির কথা উল্লেখ করেন। এগুলো হচ্চেছ, সকল কাজে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠাতা তথা বারার সম্মান পুনরুদ্ধার, হাউজিং ব্যবস্থায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনা তথা সামর্থ্যরে মধ্যে আরো ঘরবাড়ী নির্মান, ৬০ মিলিয়ন বাজেট কাটের চাপ থেকে জনগনকে রক্ষা করা, নতুন নতুন চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি এবং সরকারের বেনিফিট কাটের প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভয়েস।
মেয়র জন বিগস বলেন, মাত্র এক মাস হয়েছে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বিভিন্ন পলিসি নিয়ে আমাকে কাজ করতে হচ্ছে। সব পলিসিই আমি রিভিউ করছি। জনগনের জন্য যা উপকারী আমি তার সাথেই আছি। এডুকেশন মেনটেইনেন্স এলাউন্স, ফ্রি স্কুল মিল, ইউনি গ্রান্ট ইত্যাদি অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
হোয়াইটচ্যাপেলে টাউন হল স্থানান্তর প্রসঙ্গে বলেন, আমি হোয়াইটচ্যাপল মাস্টার প্ল্যানের সমর্থক। পুরাতন রয়েল লন্ডন হাসপাতালটি সাবেক মেয়র কিনলেও এর সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় এক’শ মিলিয়ন পাউন্ড কোথা থেকে আসবে তা তিনি বলে জাননি। ফলে এই খরচের বিষয়টি আমাকে মাথায় রাখতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রস্তাব এবং আইডিয়া নিয়ে আমি কাজ করছি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো বলে আশাবাদী।
জন বিগস অচিরেই ব্রোমলীতে কেনা মাব্বি ফেইথ কবরস্থান পরিদর্শনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ডেপুটি মেয়র সিরাজুল ইসলাম ইতিমধ্যে তা একবার পরিদর্শন করে এসেছেন। এতে দাফন শুরু হয়েছে। এতে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পার্কিং, ব্রিক লেনের টাউটিং, স্মল বিজনেসকে সহযোগিতা, ড্রাগ এবং এন্টি সোশ্যাল বিহেভিয়ার ইত্যাদি ইস্যুতে পলিসি রিভিউ করার ঘোষণাও দেন মেয়র।
ব্যায় সংকোচনের কারনে কাউন্সিল থেকে বাধ্যতামূলক কারো চাকুরী যাবে না উল্লেখ করে জন বিগস বলেন, আমরা চাইনা ফ্রন্ট লাইন সার্ভিস থেকে জনগন বঞ্চিত হোক। তবে সেচ্ছায় চাকুরী থেকে অব্যাহতি নেয়ার সুযোগ বজায় থাকবে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কাজ শুরু করেছেন বলে জানান তিনি। এ লক্ষ্যে কাউন্সিলার যশোয়া প্যাককে বিশেষ দায়িত্ব দেয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
উগ্রবাদ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জন বিগস বলেন, এটা একটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এজন্য কোন নির্দিষ্ট কমিউনিটিকে দায়ী করা ঠিক নয়। এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদী সংগ্রাম। সকলে মিলে এর জন্য কাজ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।