অষ্টম ঋণগ্রহীতা দেশ ব্রিটেন
ঋণ এবং ঋণসৃষ্ট কারণে কি হতে পারে তা এখন বিশ্ববাসী বেশ ভালো করেই জানে। গ্রিসের মতো ঐতিহ্যবাহী দেশকেও ঋণের কারণে স্রেফ ধরাশায়ী হতে হয়েছে। এমন অবস্থার দিকে আগাচ্ছিল দেশটি যে আরেকটু হলে দেউলিয়াই হয়ে যেত দেশটি। যাহোক, দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচায় গ্রিস। গত চার সপ্তাহ ধরে চলমান ঋণ সঙ্কট প্রশ্নে নতুন করে কিছু বিষয় আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। আর এই কেন্দ্র হলো, আর কতগুলো দেশ প্রচ্ছন্ন ও স্পষ্টভাবে ঋণখেলাপের আওতায় আছে।
ইতালি, রুমানিয়া এবং স্পেনের অবস্থাও গ্রিসের তুলনায় ভালো কিছু নয়। ওই দেশগুলোও একের পর এক ঋণ নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছে। কিন্তু তাই বলে ব্রিটেন!। একটা সময় বলা হতো যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কখনও সূর্য অস্ত যায় না। উপনিবেশিক অঞ্চল থেকে লুট করে আনা বিপুল অর্থ দিয়ে যে দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ রচিত সেই দেশকেও কিনা ঋণ নিয়ে চলতে হয়। গ্রিস সঙ্কট ঘণীভূত হওয়ায় জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রিটেনের কাছে ১৬০ হাজার কোটি পাউন্ড পায়।
ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেনের জাতীয় ঋণ সবচেয়ে বেশি। কিন্তু রাজপরিবার ও বিভিন্ন ব্যাংক মালিকের দেশ হওয়ায় বিপুল পরিমান ঋণ মাথায় নিয়েও দিব্যি বিলাস বৈভবে দিক কাটছে ব্রিটেনবাসীর। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান এজেন্সি ইউরোস্ট্যাট তাদের পরিসংখ্যানে জানায় যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেনের পরে আরও সাতটি দেশ আছে যারা অতিরিক্ত ঋণে জর্জরিত। এই ঋণখেলাপি দেশগুলোর তালিকায় গ্রিস ও সাইপ্রাসও রয়েছে।
এদিকে ব্রিটেনের বিকল্পধারার অর্থনীতিবিদেরা ব্রিটেনের এই অতিরিক্ত ঋণকে টাইম বোমার সঙ্গে তুলনা করছেন। পাশাপাশি তারা এও জানাচ্ছেন যে, বর্তমান ব্রিটেন সরকারগুলোর এই ঋণের ভার ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিতে হবে, যা অনৈতিক ও অস্বচ্ছ। সম্প্রতি জর্জ অসবোর্ন এই ঋণ বিতর্কটিকে আবারও ব্রিটেনবাসীর সামনে নিয়ে আসেন।
ব্রিটেনের টেজারি বিভাগের মুখপাত্র এবিষয়ে বলেন, ‘আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাবো এবং বাজেট ঘাটতি মোকাবেলা করে আরও উন্নততর অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে নিয়ে কাজ করা হবে।